আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়তে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে টি সি এস অফিসারদের : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারি৷৷ রাজ্যের সব অংশের মানুষের কল্যাণে টি সি এস অফিসার্সদের কাজ করতে হবে৷ আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়তে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে টি সি এস অফিসারদের৷ তবেই এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে উঠবে৷ আজ ধলেশ্বরস্থিত কামিনী কুমার দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত দুস্থ পরিবারদের মধ্যে শীতবস্ত্র ও শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ প্রদীপ জেলে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী সিভিল সার্ভিস অফিসারদের এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরাকে আত্মনির্ভর রাজ্য হিসাবে গড়ে তুলতে সবার কাছে উন্নয়নের সুুফল পৌঁছে দিতে হবে৷


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, টি সি এস অফিসারগণ ব্লকস্তর থেকে সচিবালয় পর্যন্ত জনকল্যাণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন দায়িত্ব পালন করে থাকেন৷ যত কঠিন কাজ করা যায় ততই মনে আনন্দ পাওয়া যায়৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কঠিন কাজ করে আজ দেশে সর্বশ্রেষ্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ তাই কঠিন সিদ্ধান্ত মানুষকে নতুন কিছু শেখায়৷ আত্মনির্ভরশীল করে তোলে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের উন্নয়ন নির্ভর করে অফিসারদের দক্ষতার উপর৷ তিনি বলেন, জনকল্যাণে সরকারের পরিকল্পনা রূপরেখা তৈরি ও তার বাস্তবায়ন অফিসাররাই করে থাকেন৷ তাই জনকল্যাণে অফিসারদের আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে৷ সকলকে আপন করে নিতে হবে৷ অফিসকে অফিস না ভেবে নিজের ঘর ভাবতে হবে৷


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে এখন কাজের পরিবেশ রয়েছে৷ প্রশাসনও সুুন্দরভাবে কাজ করছে৷ উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে সবগুলি দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে৷ যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে তা সময়ে সময়ে মনিটরিং করতে হবে৷ তবেই উন্নয়নের সুুফল মানুষের কাছে দ্রত পৌঁছে যাবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা এখন বিকাশের পথে হাঁটছে৷ উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে নতুন গতি এসেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অন্যান্য মন্ত্রীগণ, বিধায়কগণ, সচিবগণ জনকল্যাণে কাজ করছেন৷ অনেক অফিসার গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে কাজ করছেন৷


তিনি বলেন, বর্তমানে তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তর সারা রাজ্যের ৭ হাজার ছোট ছোট মৎস্য বিক্রেতার নাম নথীভুক্ত করছে৷ আগের সরকারের কাছে এই তথ্য ছিল না৷ সরকার এদের জন্য নতুন পরিকল্পনা নেবে৷ সিভিল সার্ভিস অফিসারদের উৎসাহ দিতে এই প্রথমবার ‘মুখ্যমন্ত্রী সিভিল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ চালু করা হয়েছে৷ এতে গেজেটেড অফিসার কাজের নিরীখে ২৫ হাজার টাকা শংসাপত্র এবং নন গেজেটেড অফিসারদের ১০ হাজার টাক ও শংসাপত্র পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়৷


টি পি এস সি’র মাধ্যমে আনুপাতিক হারে টিসিএস ও টিপিএস অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই অ্যাসোসিয়েশনের সমাজসেবামূলক কাজ আজ সারা রাজ্যে ছড়িয়া পড়েছে৷ করোনাকালে তারা মোহনপুর, তুলাশিখর, কিল্লায় দুস্থ চা বাগিচা সহ অন্যান্যদের সহায়তা করেছেন৷ দুই ধাপে তারা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৫ লক্ষ টাকা ও ৭ লক্ষ টাকা দান করেছেন৷ আজ এই অনুষ্ঠানে বনমালীপুর বিধানসভা এলাকার দুস্থ মা-বোনেদের মধ্যে ৫০০ চাদর, ৩০০ কম্বল, ১০০ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে নোটবুক, ১০০ জলের ফ্লাক্স ও সুকল ব্যাগ বিতরণ করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের অন্যান্য বিধানসভা এলাকাতেও এ ধরণের সমাজসেবামূলক কাজে টি সি এস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এগিয়ে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের পূণ্যভূমি৷ মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুর আধুনিক ত্রিপুরা গড়ার সূচনা করেছিলেন৷ রাজ্যের বর্তমান সরকার সেই দিশায় এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার কাজে এগিয়ে চলেছে৷


অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজসেবী দীপক কর৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম সাহা৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব বনমালীপুর এলাকার দুস্থ প্রীতি দত্তের হাতে শিক্ষা সামগ্রী ও বাসন্তী সূত্রধরের হাতে শীতের চাদর তুলে দেন৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিগণ দুস্থদের হাতে অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেন৷ অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা, ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দিলীপ কুমার চাকমা ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য-সদস্যাগণ উপস্থিত ছিলেন৷