নয়াদিল্লি, ৩১ জানুয়ারি (হি.স.): দিল্লির ইস্রায়েলি দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের প্রাথমিক তদন্তের পর এর সঙ্গে ইরান যোগের সম্ভাবনা ক্রমেই উজ্জ্বল হচ্ছে। বিস্ফোরণস্থল থেকে সামান্য দূরে পাওয়া এক চিঠি থেকে সেই ধারণা জোরাল হয়েছে। ইস্রায়েলকে ‘শিক্ষা’ দিতেই ওই বিস্ফোরণ কিনা তা খতিয়ে দেখছে ঘটনার তদন্তকারি সংস্থা এনআইএ ।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া মুখ বন্ধ খামের চিঠিতে ইস্রায়েলি দূতাবাসের সামনের বিস্ফোরণকে ‘ট্রেলার’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিস্ফোরণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে কাশেম সোলেমানি ও মহসিন ফকরিজাদে নামে দু’জনের উল্লেখ রয়েছে। প্রথম জন ইরানের শীর্ষস্থানীয় মিলিটারি কমান্ডার। দ্বিতীয় জন পরমাণুবিজ্ঞানী। ২০২০ সালে তাঁদের মৃত্যুর পিছনে আমেরিকা ও ইস্রায়েলকে দায়ী করেছিল ইরান । দিল্লির বিস্ফোরণ সেই হত্যার বদলারই ‘ট্রেলার’ কিনা আপাতত সেটা নিয়েই ভাবছেন তদন্তকারীরা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্তার দাবি, ভারতের সঙ্গে ইরান ও ইস্রায়েল, দুই দেশেরই বন্ধুর সম্পর্ক। কিন্তু তদন্তের পর কোনও দেশের বিরুদ্ধে মজবুত প্রমাণ পাওয়া গেলে ভারত তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে। ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখা হচ্ছে গত কয়েক সপ্তাহে ইরান থেকে কারা কারা রাজধানীতে এসেছিলেন। এসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে ইরানের দূতাবাসের কাছ থেকে। এদিক ইস্রায়েলের রাষ্ট্রদূত মালকা জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণের ঘটনা তাঁদের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল না। কেননা আগেই এই ধরনের নাশকতার ‘হুমকি’ দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ দিল্লিতে ইস্রায়েলের দূতাবাসের সামনে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় কেউই হতাহত না হলেও আশপাশের বহু গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ফরেনসিক তদন্তের পর উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিস্ফোরণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইইডি-তে আরডিএক্স থাকলে বিস্ফোরণে আরও বেশি ক্ষতি হতে পারত। স্প্লিন্টার হিসেবে বোমাটিতে ছিল বল বিয়ারিং।
এদিকে এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে জইশ-উল-হিন্দ । জইশ-উল-হিন্দ নামের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম এতদিন পর্যন্ত অজানাই ছিল। কোন টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে মেসেজটি করা হয়েছে, গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন সেই দিকটিও।