সেরাম ইন্সটিটিউটে অগ্নিকান্ডে মৃত পাঁচ, নিরাপদে কোভিশিল্ড প্ল্যান্ট

মুম্বই, ২১ জানুয়ারি (হি.স.) : পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এসআইআই) একটি কারখানায় আগুনের ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচজনের।বৃহস্পতিবার বিকেলে পুনে জেলার মাঞ্জারি এলাকায় অবস্থিত সিরাম ইনস্টিটিউটের নতুন প্ল্যানেটে হঠাৎ আগুন লাগে। সূত্রের খবর এই প্ল্যান্টের ১ নম্বর গেটের কাছে আগুন লাগে। বিসিজি ভ্যাকসিন এই প্ল্যান্টেই তৈরি করা হয়। ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে দমকল । এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে । আগুন লাগার পরে তিনজন কর্মীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সিরাম ইনস্টিটিউট নিজেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরি করছে, তবে এই আগ্নিকান্ডে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের উত্পাদনকে প্রভাবিত করবে না । এদিন আগুন লাগা প্ল্যান্ট থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছে কোভিশিল্ড উৎপাদন প্ল্যান্ট ।

এদিন সিরাম ইনস্টিটিউটের মাঞ্জারীতে প্ল্যান্টের নতুন ভবনের দু তালায় আগুন লেগে যায়। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন দমকলকর্মীরা। এর আগে  ইনস্টিটিউটের নিজস্ব আগ্নিনির্বাপক ব্যাবস্থা নিয়ে আগুন নেভানো শুরু করা হয় । সেখানকার সমস্ত কর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেরাম ইন্সটিটিউটে কোভিশল্ড টিকা তৈরি হয়েছে। তবে এই টিকা তৈরির কাজ এই প্ল্যান্টে হয়নি। এই প্ল্যান্টে বিসিজি টিকা তৈরির কাজ হয়।

বিজেপির সাংসদ গিরিশ বাপত জানিয়েছেন, তিনি জেলা কালেক্টর ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন। সকল কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। এই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগুন নেভানোর কাজ চলছে। এই আধিকারিকরা  জানিয়েছেন যে, সিরাম ইনস্টিটিউটে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন প্ল্যান্ট সম্পূর্ণ নিরাপদ । ঘটনাস্থল থেকে সমস্ত কর্মচারীকে উদ্ধার করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সেরামের মঞ্জরীর কারখানার পঞ্চম তলে আগুন লাগে। গলগল করে ঘন কালো ধোঁয়া বেরোতে থাকে। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আশপাশের এলাকা। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্বভাবতই আতঙ্ক তৈরি হয়। গত শনিবার থেকে দেশে টিকাকরণ কর্মসূচির শুরুর পর মজুত থাকা কোভিশিল্ডের ক্ষতির আশঙ্কা আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

সেরামের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা সুরেশ যাদব জানিয়েছেন, যেখানে আগুন লেগেছে, সেখানে টিবির বিসিজি টিকা উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ চলছিল। অগ্নিকাণ্ডের জায়গা থেকে বেশ অনেকটা দূরে কোভিশিল্ড তৈরি করা হয়। সেখানেই মজুত রাখা হয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনাভাইরাস টিকা। ফলে কোভিশিল্ডে কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

পুণের মেয়র মুরলীধর মোহল জানিয়েছেন, দুপুর ২ টো ৫০ মিনিট নাগাদ আগুন লাগার খবর পায় দমকল। তারপর ঘটনাস্থলে দ্রুত দমকলের ১০ টি ইঞ্জিন এবং দুটি ট্যাঙ্কার পাঠানো হয়েছে। পুণের পুরনিগমের মুখ্য দমকল আধিকারিক প্রশান্ত রণপিসে বলেন, ‘বাড়ির ভিতরে চারজন ছিলেন। আমরা এখনও পর্যন্ত তিনজনকে উদ্ধার করেছি। কিন্তু ধোঁয়ার কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম তলে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।’

পরে একটি বিবৃতি জারি সেরাম কর্তা আদর পুনাওয়ালা জানান, আগুনে কয়েকটি তল ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। সেরাম কর্তা বলেন, ‘সব সরকার এবং মানুষকে আমি আশ্বস্ত করতে চাইছি যে একাধিক কারখানার জন্য কোভিশিল্ডের উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোনও ক্ষতি হবে না। এরকম পরিস্থিতি সামলানোর জন্য সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ায় আরও কয়েকটি আস্তানা রাখা তৈরি রেখেছিলাম।’