নিজস্ব প্রতিনিধি, বিলোনীয়া, ২ জানুয়ারি৷৷ একদিকে আগরতলা সিটি সেন্টারের সামনে চাকুরী ফিরে পাবার জন্য চাকুরীচ্যুত ১০৩২৩ এর শিক্ষকরা আন্দোলনরত , আর অন্যদিকে সংসারের অভাব অনটনের কারণে দিশেহারা হয়ে কোন ভরসা না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল ১০৩২৩ এর চাকুরী চ্যুত শিক্ষকের একজন উত্তম ত্রিপুরা৷ চাকরিচ্যুত হয়ে সংসার চালাতে না পেরে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে ১০৩২৩ এর শিক্ষক উত্তম ত্রিপুরা , শনিবার ভোর রাতে উত্তম আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে৷ ঘটনা রাজনগর পিআর বাড়ি থানাধীন ওয়াং ছড়ার কমলাকান্ত পাড়াতে৷ চাকুরী চ্যুত শিক্ষকের মৃত্যু কে কেন্দ্র করে শোকের ছায়া নেমে আসে৷
আমি এর বিচার চাই আমার স্বামীর মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী৷ আমিও স্বামীর সাথে সহ মরনের যাত্রী হবো৷ স্বামীর আগে আমাকে আগুন দাও গগনভেদি চিৎকার আর কাঁদতে কাঁদতে উত্তম ত্রিপুরার স্ত্রী শেফালী ত্রিপুরা মৃত স্বামীর দেহ সৎকারের জন্য সাজানো চিতাতে শুয়ে পড়ে৷ আত্মীয়-স্বজনেরা টেনে আনার জন্য প্রয়াস চালালেও চিতা থেকে উঠে আসতে চাইছে না৷ উচ্চ আদালতের রায়ে ১০৩২৩ এর শিক্ষক শিক্ষিকারা চাকুরী চ্যুত হয়৷ এর মধ্যে উত্তম ত্রিপুরা একজন৷ বয়স ৩২ বছর৷ স্ত্রী শেফালী ত্রিপুরা সহ দুই সন্তান নিয়ে ও মা-বাবা বোন মিলে সংসার৷ উত্তম ত্রিপুরার উপর ছিল সংসারের দায়িত্ব৷ চাকুরী চ্যুত হয়ে উত্তম ত্রিপুরা দিশেহারা হয়ে পড়ে৷ একদিকে ব্যাঙ্কের লোন , অন্যদিকে সংসার প্রতিপালন করতে গিয়ে ঋনগ্রস্ত হয়ে পড়ে৷
এছাড়া চাকুরী ফিরে পাবার কোন আশা ভরসা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে৷ সংসার প্রতিপালন করতে গিয়ে হিমসিম তার উপরে ব্যাঙ্ক লোনের নোটিশ ও ঋন গ্রহিতারা বাড়িতে আনাগোনা৷সব কিছু মিলিয়ে নিজেকে শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে নেয় চাকুরী চ্যুত উত্তম৷ তার জন্য দুই সন্তান সহ স্ত্রীকে শুক্রবার বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়৷ স্ত্রী শেফালী ত্রিপুরা জানত না স্বামীর সাথে এই শেষ দেখা এবং কথা৷শনিবার ভোর রাতে উত্তম ত্রিপুরা নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নিজেকে ঋনগ্রস্ত থেকে মুক্ত করলো৷ এই দিকে উত্তম ত্রিপুরার স্ত্রী শেফালী ত্রিপুরা খবর পেয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে ছুটে আসে বাড়িতে৷ স্বামীর এবস্থা দেখে বুকের উপর শুয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে৷