লখনউ, ৫ ডিসেম্বর (হি. স.): করোনার কারণে আর্থিক সঙ্কটের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছে বহু মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশ সরকার কর্মসংস্থান তৈরি করার লক্ষ্যে ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। চলতি আর্থিক বছরে ৫০ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শনিবার মিশন রোজগার অভিযান শুরু করল উত্তরপ্রদেশ সরকার। কর্মপ্রার্থীদের স্বাবলম্বী করে তোলাই মূল লক্ষ্য। এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মতন রাজ্যে এটি হচ্ছে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান প্রকল্প।
১০০ দিনের কাজের থেকেও বেশি কর্মসংস্থান হবে এই প্রকল্পে। জানা গিয়েছে সরকারের বিভিন্ন দফতরে যে সকল শূন্যপদ রয়েছে তা এই প্রকল্পের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। সরকারের অধীনে থাকা পরিষদ, নিগম, সংস্থাগুলোতে যেসকল খালি পদ রয়েছে তা পূরণ করা হবে। বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মপ্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ এই প্রকল্পের মাধ্যমে নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্দেশ দিয়েছেন যে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পরিসর বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
শনিবার রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলির ৩৬ হাজার ৫৯০ নবনিযুক্ত সহশিক্ষকদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মিশন রোজগার অভিযানের শুভারাম্ভ করেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া এই নিয়োগপত্র দেওয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হল। গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে নিষ্ঠা সহকারে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও অবিচল থাকাটা একটা বিশাল উপলব্ধি। এই প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে গিয়ে রাজ্য সরকারকে বহু বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একের পর এক মামলার কারণে প্রক্রিয়া পূর্ণ করতে সময় লেগে গিয়েছে। রাজ্য সরকার প্রতিটা ক্ষেত্রে ব্যাপক কাজ করে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকারি চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে বিভেদকামী মনোভাবের যে কলঙ্ক রাজ্যের গায়ে লেগেছিল। তা ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া রাজ্য সরকার। এই নিয়োগ-প্রক্রিয়া কারো সঙ্গে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়নি।
নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া এবং দক্ষতার মানদণ্ডে এখনো পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে ৩ লাখের বেশি নিয়োগ হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে আরো ৫০ লাখ যুবকযুবতীদের নিয়োগ, বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ, স্বাবলম্বী মাধ্যমে কর্মসংস্থান দেওয়া হবে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজ্যের মধ্যে থাকা ৪.৩৭ লক্ষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ১১০৬২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। এতে রাজ্যে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কর্মসংস্থান বাড়বে। চলতি আর্থিক বর্ষে রাজ্যজুড়ে ২০ লক্ষ নতুন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর মাধ্যমে ২৫ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। কর্মপ্রার্থীদের প্রতিটা ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য হেল্পডেস্ক গড়ে তোলা হয়েছে প্রতিটি দফতরে। প্রতিটি শহরে জেলাশাসক এর নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সময়ের চাহিদা মেনে কর্মসংস্থানে নতুন খবর তা আপডেট করা হবে। মিশন রোজগার প্রকল্পটি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে শ্রম এবং সেবা আয়োজন বিভাগ।
যে সকল ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়েছে তা দ্রুততার সঙ্গে সমাধান করার জন্য বিশেষ অভিযান চালানো হবে। রাজ্যের তরুণ-তরুণীরা যাতে প্রশিক্ষিত শ্রমিকের পরিণত হতে পারে সেই লক্ষ্যে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। উত্তরপ্রদেশ কৌশল বিকাশ নিগমের ওয়েবসাইটে গিয়ে লগইন করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় রাজ্যের ৫০ হাজার যুবক যুবতীদের বিনামূল্যে আন্তর্জাতিক স্তরে পাঠক্রম সম্পর্কে অবগত করানো হবে। আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অনুমোদিত ৩৮০০ পাঠক্রমের মধ্যে তরুণ-তরুণীরা বেছে নিতে পারবেন পছন্দের মতন বিষয়।