আগরতলা প্রেসক্লাবের ঐতিহাসিক ভোট সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ নভেম্বর৷৷ এসেম্বলি শক্তি দেখাতে পারল না৷ আগরতলা প্রেস ক্লাব নির্বাচনে বেশিরভাগ আসনই ছিনিয়ে নিয়েছে ফোরাম৷ সামান্য ভোটের ব্যবধানে সভাপতি পদ হারালেও অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদে জয় ফোরাম-কে শক্তি যোগাবে বলেই মনে হচ্ছে৷ আজ আগরতলা প্রেস ক্লাবে ঐতিহাসিক ভোট সম্পন্ন হয়েছে৷ সভাপতি পদে সুবল কুমার দে এবং সম্পাদক পদে প্রণব সরকার বিজয়ী হয়েছেন৷


আগরতলা প্রেস ক্লাব নির্বাচনে ২২ জন প্রার্থী আজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন৷ মোট ভোটার ছিলেন ২৮৮ জন৷ তাঁদের মধ্যে ২৮৭ জন এদিন মতাধিকার প্রয়োগ করেছেন৷ আগামী দুই বছরের জন্য ভোটার-রা প্রেস ক্লাব পরিচালন কমিটি বাছাই করেছেন৷ সেভ আগরতলা প্রেস ক্লাব তথা এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট-র প্যানেলে প্রার্থী ছিলেন সভাপতি পদে সুবল কুমার দে, সহ-সভাপতি পদে অরুন নাথ, সম্পাদক পদে জয়ন্ত দেবনাথ, সহ-সম্পাদক পদে রাজেশ কর, কোষাধ্যক্ষ পদে আর কে তরুনজিৎ সিং এবং সদস্য পদে মিহির লাল সরকার, মানুষ আচার্য, প্রণব ঘোষ, কমল চৌধুরী এবং দুলাল চক্রবর্তী৷ অন্যদিকে ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড প্রটেকশন অফ মিডিয়া কমিউনিটি প্যানেলে প্রার্থী ছিলেন সভাপতি পদে ফোরাম সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ন্ত ভট্টাচার্যী, সম্পাদক পদে প্রণব সরকার, সহ সম্পাদক পদে দেবব্রত চক্রবর্তী ও রমাকান্ত দে, কোষাধ্যক্ষ পদে দিপন্ত মজুমদার, রঞ্জন রায়, সুপ্রভাত দেবনাথ, প্রবীর দাস এবং অনির্বাণ দেবনাথ৷
আজ প্রেসক্লাব নির্বাচনে সভাপতি পদে খুবই অল্প ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন সুবল কুমার দে৷ মাত্র আট ভোটের ব্যবধানে তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জয়ন্ত ভট্টাচার্য্যকে পরাজিত করেছেন৷ তবে, সম্পাদক পদে ভাল ব্যবধান রেখে জয়ী হয়েছেন প্রণব সরকার৷ তিনি ৫৬টি ভোটের ব্যবধানে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জয়ন্ত দেবনাথকে পরাজিত করেছেন৷ এদিকে, সহসভাপতি পদে অরুণ নাথ ৪১টি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন৷


এদিকে, সহ সম্পাদক পদে রমাকান্ত দে ১৫৫টি ভোট এবং দেবব্রত চক্রবর্তী ১৪০টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন৷ কোষাধ্যক্ষ পদে তপন মজুমদার মাত্র ১৫টি ভোটের ব্যবধানে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আর কে তরুণজিৎ সিংকে পরাজিত করেছেন৷ অন্যদিকে কার্য্যকরী সদস্য হিসেবে মিহির লাল সরকার, রঞ্জন রায়, প্রবীর দাস, কমল চৌধুরী এবং মনিষ আচার্যী বিজয়ী হয়েছেন৷
এদিকে, আজ নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আগরতলা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সভায় প্রেসক্লাবের আয় ব্যয়ের হিসাব নিকেশ ও সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে৷ এদিনের সভায়, সাংবাদিকরা নিজেদের বক্তব্য রেখেছে সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের উপর৷ প্রেসক্লাবের সমালোচনার পাশাপাশি সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের মানোন্নয়নে একাধিক প্রস্তাবও রেখেছেন তারা৷
এদিন, দুপুর একটা থেকে আগরতলা প্রেসক্লাবে নির্বাচন শুরু হয়েছিল৷ রাত প্রায় সাড়ে নয়টা নাগাদ রিটার্নিং অফিসার বরিষ্ট আইনজীবী সন্দীপ দত্ত চৌধুরী ফলাফল ঘোষণা করেছেন৷ তিনি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট পরিচালনায় সহযোগিতা করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷
এবারে আগরতলা প্রেসক্লাব নির্বাচন ইতিহাস রচনা করেছে৷ এই ভোটকে ঘিরে উন্মাদনা এবং অপপ্রচার অতীতের সমস্ত নির্বাচনকে ছাপিয়ে গিয়েছে৷ তবে, জারিজুরি করে নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় না, তা প্রমাণিত হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, এই নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ মদতও কার্য্যত ব্যর্থ হয়েছে৷ কারণ, দ্বিচারিতা করে ভোট বৈতরণি পাড় হওয়ার দিন এখন ফুরিয়ে এসেছে৷ তা আগরতলা প্রেসক্লাব নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে৷ এই নির্বাচন বুঝিয়ে দিয়েছে, নীতি এবং আদর্শ থেকে বিচ্যুতির ফলাফল শূণ্য হয়৷ কারণ, গ্রহণযোগ্যতাই ভোটের বাক্সে এবার প্রতিফলিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷