নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ১৮ অক্টোবর৷৷ ন্যায় বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসলেন এক অসহায় পরিবার৷ ঘটনা চড়িলাম বাজার স্ট্যান্ড এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশে৷ জাতীয় সড়কের পাশে তাবু টাঙ্গিয়ে মেয়ে এবং নাতি সহ আমরণ অনশনে বসলেন এক নির্যাতিত পরিবার৷ বিশালগড় থানা মুর্দাবাদ এবং ন্যায় বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনের জন্য পথে বসা হলো এই দাবি নিয়ে রাজপথে বসলেন পরিবারটি৷
চড়িলাম এর আড়ালিয়া গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিল্পী দেবনাথ জানান গত বুধবার অর্থাৎ ১৪ ই অক্টোবর রাত্রি ১০ ঘটিকায় পার্শবর্তী বাড়ির শিবু দেবনাথ বলপূর্বক শিল্পীর ঘরে ঢুকে৷ শিল্পীকে মারধর করে এবং শিল্পীর ব্লাউজ ছিড়ে ফেলে বলে শিল্পী অভিযোগ করেন৷ যখন শিবু শিল্পীর ঘরে প্রবেশ করে তখন শিল্পীর বৃদ্ধ অসুস্থ মা বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এবং শিল্পীর ছোট ছেলে স্বপন ঘুমিয়ে ছিলেন এবং শিল্পীর পিতা ঘরে ছিলেন না৷ এমন সময় শিবু ঘরে ঢুকে শিল্পীকে ধমকাতে থাকেন যে শিল্পী যাতে তার স্বামীর বাড়িতে তার স্বামী ব্রজ পুর কদমতলী রাজমিস্ত্রি সুজন দেবনাথ এর বাড়ি চলে যায়৷
না হলে শিল্পী কে মারপিট করে জোর করে স্বামীর বাড়ি পাঠিয়ে দেবে৷ অসহায় শিল্পীর কাগজপত্রগুলো ও শিবু কে দিতে বলেন৷ শিল্পী বলেন আমি বাবার বাড়িতে থাকি তাতে তোর কি৷ আমার স্বামী ভালো নয় রোজ আমাকে মদ খেয়ে মারধর করে৷ তাই বিগত ১০ বছর ধরে আমি আমার বাবার বাড়িতে থাকি৷ আমি যাব না সম্পূর্ণ আমার ব্যাপার৷ শিল্পী আরো অভিযোগ করেন শিবু দেবনাথ নাকি তার স্বামী সুজন দেবনাথ এর সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে একসঙ্গে কাজ করেন এবং মদ খান৷ বুধবার রাত্রিবেলায় ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল বেলায় শিল্পি দেবনাথ তার পিতা নেপাল দেবনাথ এর সঙ্গে বিশালগড় থানায় গিয়ে শিবু দেবনাথ এর বিরুদ্ধে ১৫ ই অক্টোবর মামলা করেছেন৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল মামলা করার চার থেকে পাঁচ দিন পরেও বিশালগড় থানার পুলিশ একবারের জন্য ও শিল্পী দেবনাথ এর বাড়িতে আসেনি৷ এবং অসহায় পরিবারটিকে নানাভাবে হুমকি এবং ধমকি দিচ্ছে শিবু দেবনাথ বলে অভিযোগ করেন শিল্পীর পিতা নেপাল দেবনাথ৷
প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে পরিবারটি৷ তাই আইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে এবং বিশালগড় থানার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে এবং শিবু দেবনাথ থেকে বারবার হুমকি এবং ধুমকি খেয়ে শেষ পর্যন্ত রবিবার সকাল সাড়ে ১০ঘটিকায় চড়িলাম বাজারে আগরতলা সাবরুম জাতীয় সড়কের পাশে পরিবারটি ন্যায় বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন৷ খবর পেয়ে আড়ালিয়া গ্রামের প্রধান এসে পরিবারটিকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে এবং পরিবারটিকে ন্যায্য বিচার পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমরণ অনশন থেকে তুলে নেন৷ প্রধান আশ্বাস দিয়েছেন আপনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন৷ আড়ালিয়া গ্রামের প্রধানের সুস্থ এবং সুন্দর ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি পেয়ে নেপাল দেবনাথ এবং শিল্পী দেবনাথ আমরণ অনশন তুলে নেন৷ এই ঘটনায় হতবাক চড়িলাম এর মানুষ৷ তবে শিল্পী দেবনাথকে যখন সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করে যে শিবু দেবনাথ ওকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল কিনা শিল্পী দেবনাথ তখন অকপটে স্বীকার করেন না আমাকে কোন ধর্ষণ করে নি৷ শুধু আমাকে মারধর করেছে শিবু দেবনাথ৷
শিল্পী দেবনাথ সুদন দেব নাথের দ্বিতীয় স্ত্রী৷ বিয়ের পর থেকেই অকথ্য নির্যাতন করতো শিল্পীর উপর৷ তাই শিল্পী চলে আসেন বাপের বাড়িতে৷ অনেকদিন পর পর সুধন হঠাৎ হঠাৎ আসে এবং এক দুই দিনের জন্য কদমতলী নিয়ে যায় আবার আমাকে মারপিট করে বাপের বাড়ি দিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন অসহায় শিল্পী৷ শিল্পীর এই করুণ কাহিনী দেখে পথচলতি জনসাধারণ সহ গোটা গ্রামের মানুষ বাকরুদ্ধ৷ গোটা গ্রামের মানুষ চাইছে দুষ্ট শিবুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক৷