নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ অক্টোবর৷৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট রাজ্য মিজোরামে মঙ্গলবার ফের ভূমিকম্প হয়েছে৷ আজ সকাল ৭টা ৬ মিনিটে ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৪.১৷ এ-নিয়ে গত ১১ মাসে ৪৪ বার কেঁপেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চল৷ বিশেষ করে মণিপুর, মিজোরাম এবং অরুণাচল প্রদেশে ঘন ঘন ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে গত কয়েকমাসে৷ এ-বিষয়ে ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির আধিকারিক আরকে সিং বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া রাজ্য হওয়ায় সেখানে ভূকম্প ঘন ঘন অনুভূত হচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে ঘন ঘন ভূকম্প হচ্ছে৷ মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ এবং মিজোরামে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে৷ ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলোজির রিপোর্ট অনুযায়ী, মণিপুরে গত ১১ মে, ২৫ মে, ২৮ জুন, ৭ আগস্ট, ১১ আগস্ট এবং ৩১ আগস্ট ভূমিকম্প হয়েছে৷ তেমনি অরুণাচল প্রদেশে গত ৭ এপ্রিল, ১৭ এপ্রিল, ১৭ মে, ৩০ জুলাই এবং ১২ আগস্ট, ২৪ আগস্ট ভূমিকম্প হয়েছে৷ এছাড়া, মিজোরাম এবং অসমেও একাধিকবার ভূমিকম্প হয়েছে৷ গত ১০ অক্টোবর ভোর ৬-টা ৯ মিনিটে চাম্পাই জেলা ও সংলগ্ণ এলাকায় ৩.৬ প্রাবল্যের অনুভূত হয়েছে ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি৷ এদিনই রাত ১১.০৮ মিনিটে মৃদু ভূকম্প হয়েছে অসম এবং মণিপুরে৷
একদিকে করোনা সংকট, অন্যদিকে ঘন ঘন সংঘটিত ভূমিকম্পে মানুষজন আতঙ্কিত৷ গত ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায় ৪৪ বার ভূমিকম্প হয়েছে৷ সিসমিকের হিসেবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে পাঁচের মধ্যে রাখা হয়েছে৷ তাই এই অঞ্চলে ঘন-ঘন ভূকম্প সংঘটিত হয়৷ এ ব্যাপারে সতর্কতাই একমাত্র অবলম্বন বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷
আজও মিজোরামে ভূমিকম্প হয়েছে৷ সকাল ৭টা ৬ মিনিটে ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৪.১৷ মিজোরামের চাম্পাই এলাকা থেকে ৬২ কিমি পূর্ব দক্ষিণ পূর্বে ভূগর্ভ থেকে ৮২ কিমি গভীরে ওই কম্পনের উৎপত্তি হয়েছে৷ তাতে অবশ্য ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি৷
ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির আধিকারিক আরকে সিং দাবি করেন, সিসমিক জোন ৫-এ অবস্থিত হওয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায়ই ছোটখাটো কম্পন অনুভূত হয়৷ এতে অস্বাভাবিক এবং আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কারণ নেই৷ তাঁর কথায়, ভারতীয় প্লেট প্রতি বছর উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে ৫ সেন্টিমিটার করছে সরছে৷ এতে ঘর্ষণ হয়৷ ফলে ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে৷ তাঁর দাবি, অরুণাচল প্রদেশের উত্তর দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে৷ সেখানে ভূমিকম্প হচ্ছে৷ তেমনি মণিপুর ও মিজোরামের পূর্ব দিকে মায়ানমার অঞ্চলে ক্রমাগত ঘর্ষণে ভূমিকম্প হচ্ছে৷ তার প্রভাবে ওই দুই রাজ্যেও ঘন ঘন ভূকম্প অনুভূত হচ্ছে৷
তিনি বলেন, রিখটার স্কেলে কম তীব্রতার ভূমিকম্প আগেও হয়েছে৷ কিন্তু তা আগে নজরে আসত না৷ এখন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় অতি সামান্য তীব্রতার ভূমিকম্প নজরে আসছে৷ এতে অবশ্য সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব করছে৷

