নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অক্টোবর৷৷ সপ্তম বেতন কমিশনে ত্রিপুরার সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কপালে জুটেছে ২.২৫-এর জায়গায় ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর৷ তার বিনিময়ে জুটেনি মহার্ঘ্য ভাতা৷ নিয়মিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন ত্রিপুরার বিশাল অংশের শিক্ষক-কর্মচারী৷ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন এই বিষয়গুলি তুলে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে৷ শুধু তা-ই নয়, হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁরা বলেছেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের অসন্তুষ্ট করে প্রশাসনকে গতিশীল করা যাবে না৷ ফেডারেশনের মহাসচিব সমর রায়ের সাফ কথা, কর্মচারীদের ক্ষোভ যেভাবে বাড়ছে, তাতে যে কোনও সময় তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে৷ তখন সরকারের সামনে গভীর সংকট নেমে আসবে৷
এদিন সমরবাবু বলেন, ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তনে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই৷ অথচ, ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তনের পর তারাই সর্বাধিক অবহেলিত৷ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভিজন ডকুমেন্টে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ত্রিপুরায় শিক্ষক-কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সপ্তম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন পাওয়া স্থির ছিল৷ কিন্তু সপ্তম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনে শুধুমাত্র ২.২৫-এর জায়গায় ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর কপালে জুটেছে৷ আবার অনেকের ভাগ্যে তাও জুটেনি৷ তাঁর কথায়, অধিকাংশ অধিগৃহীত সংস্থায় সপ্তম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের ধাঁচে বেতন-ভাতার পরিবর্তন হয়নি৷ শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা পরিবর্তন করা হয়নি৷
সমর রায় ক্ষোভের সুরে বলেন, ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে গত ৩১ মাসে কোনও মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়া হয়নি৷ তেমনি রাজ্যের বিশাল অংশের অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করেনি ত্রিপুরা সরকার৷ এমন-কি, আজও বন্ধ হয়নি স্থির বেতনে চাকরি দেওয়া৷ বদলি নিয়েও ফেডারেশনের মহাসচিব উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর কথায়, নামগোত্রহীন নেতারাই আজ বদলির তালিকা তৈরি করছেন৷ বদলি নীতি না মেনে যেমন-খুশি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷ তাঁর দাবি, শিক্ষা দফতরের সাম্প্রতিক বদলির তালিকায় গুরুতর অসুস্থ শিক্ষক, অবসরের দোরগোড়ায় রয়েছেন এবং অবসরে গিয়েছেন তাঁদেরও নাম রয়েছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, বাদ যাননি চাকরিচ্যুত শিক্ষকরাও৷
তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, কর্মচারীদের অসন্তুষ্ট করে প্রশাসন গতিশীল রাখা সম্ভব নয়৷ তেমনি, শিক্ষকদের উন্নত বেতনক্রম না দিয়ে তাঁদের নিয়মনীতি ছাড়া বদলি করে গুণগত শিক্ষা পাওয়াও অসম্ভব বলে দাবি করেন তিনি৷ সাথে তিনি ত্রিপুরা সরকারকে সতর্ক করে বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে৷ তাতে, যে কোনও দিন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে৷ তখন, সরকারের সামনে গভীর সংকট নেমে আসবে৷ তাঁর হুঁশিয়ারি, শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রাপ্য মিটিয়ে দিক রাজ্য সরকার৷ নইলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আগামী দিনে সম্ভব হয়ে উঠবে না৷

