নয়াদিল্লি, ২০ সেপ্টেম্বর (হি. স.): কৃষি বিল নিয়ে রাজ্যসভায় চূড়ান্ত বিতর্ক সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে। রবিবাসরীয় সকালে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় দুটি কৃষি বিল যথাক্রমে ফারমার্স এন্ড প্রডিউস ট্রেড এন্ড কমার্স (প্রমোশন এন্ড ফেসিলিটেশন)বিল ২০২০, এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যাসিওরেন্স এন্ড ফার্মস সার্ভিস বিল ২০২০ পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। ইতিমধ্যেই এই বিল দুটি সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ধনী ভোটে পাশ হয়ে গিয়েছে। বিল পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিল দুটি ঐতিহাসিক এবং কৃষকদের জীবনকে বদলে দেবে। নিজের উৎপাদিত পণ্য কে দেশের যেকোন প্রান্তে বিক্রি করার স্বাধীনতা পাবে কৃষকরা। এই বিল দুটি সঙ্গে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের কোন রকমের সম্পর্ক নেই। এই বিল পেশের পরই সংশোধনী প্রস্তাব এনে বিল দুই টিকে সিলেট কমিটিতে পাঠানোর পক্ষে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সি পি আই (এম) নেতা কে কে রাগেশ, ডিএমকে- টি শিবা। এদিন অধিবেশনের শুরুতেই এই বিলের বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে কংগ্রেস। কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিং বাজওয়া জানিয়েছেন, নেতিবাচক সময় এবং নেতিবাচক ভাবে বিলটি পেশ করা হয়েছে। কংগ্রেস দল এই বিলের বিপক্ষে। কৃষকদের মৃত্যুর পরোয়ানা সই করবে না কংগ্রেস। পঞ্জাবের কৃষকরা এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছে। এই বিল কৃষকদের ওপর আঘাত হানা হয়েছে। কৃষক এবং কৃষি বাজার রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। এই বিল ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী। এ পি এম সি এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের ওপর কোন ভাবে আঘাত আসুক সেটা আমরা চাই না। সংসদে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একবারও বলেননি যে তিনি কৃষকদের কাধে চেপে বসা ভার লাঘব করবেন। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, এই বিলে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা যাবে এবং আত্মহত্যার রোধ করা যাবে এমন কোনো নিশ্চয়তা কেন্দ্র কি দেবে। এই দুটি বিল নিয়ে আলোচনা করার জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকা প্রয়োজন। শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ নরেশ গুজরাল জানিয়েছেন, এই বিলটিকে সিলেট কমিটিতে পাঠানো একান্ত জরুরী। কৃষি সংক্রান্ত সমস্ত পক্ষের কথাটা শোনা প্রয়োজন। পঞ্জাবের কৃষকরা দুর্বল নয়। ডিএমকে সংসদ টি কে এস এলানগোভান জানিয়েছেন, দেশের জিডিপিতে যেসব কৃষকদের অবদান ২০ শতাংশ তাদেরকে ক্রীতদাসে পরিণত করা হবে। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন দাবি করছে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা হবে। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হতে ২০২৮ সাল লেগে যাবে। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রামগোপাল যাদব জানিয়েছেন, প্রথম থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে সরকারপক্ষ বিলটি নিয়ে বিতর্ক করতে চাইছে না। তারা বিল দুটিকে পাশ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমন কি কোন কৃষক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি বিলগুলিকে নিয়ে।
উল্লেখ করা যেতে পারে এই কৃষি বিল নিয়ে উত্তর ভারতের পঞ্জাব এবং হরিয়ানার ব্যাপক পরিমাণে কৃষক আন্দোলন দানা বেঁধেছে।