নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ সেপ্ঢেম্বর৷৷ কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় সংক্রমিতদের যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবার মাধ্যমে সুুস্থ করে তুলতে ও মৃত্যহার ঠেকাতে রাজ্য সরকার সম্প্রতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এই সিদ্ধান্তগুলি আগরতলার জিবি হাসপাতালে খুব দ্রততার সাথে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে৷ আজ রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক এজিএমসির কাউন্সিল হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান৷ যদিও শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দশ জনের মৃত্যু হয়েছে৷
সাংবাদিক সম্মেলনে সাংসদ শ্রীমতি ভৌমিক জানান, বিগত কিছুদিন ধরে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন হিসেবে তিনি নিজেই জিবিতে উপস্থিত থেকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সার্বিক ব্যবস্থাপনার তদারকি করেছেন৷ জিবি হাসপাতালে কোভিড রোগীদের ভর্তি করানোর পর তাদের পরিবারের লোকদের সাথে যোগাযোগ করানো হচ্ছে৷ রোগীর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তাদের পরিবার-পরিজনদের জানানো হচ্ছে৷ ফ্লোর ম্যানেজমেন্ট করার জন্য ১৮ জন স্বেচ্ছাসেবককে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ এনটিএস ওয়ান এবং এনটিএস টু দুটি বিল্ডিংএ জলের পাইপলাইন সারাই করা হয়েছে৷ রোগীদের জল পেতে এখন আর কোনও সমস্যা হচ্ছে না৷ ডাক্তারের সাথে রোগীদের যোগাযোগ রাখার জন্য এনটিএস ওয়ান বিল্ডিংএ পি এ সিস্টেম লাগানো হয়েছে৷ এনটিএস টুতেও শীঘ্রই লাগানো হবে৷
সাংসদ শ্রীমতি ভৌমিক জানান, রোগীদের শয্যার কাছেই খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ আজ থেকে শুরু করা হয়েছে৷ তাছাড়া রোগীদের জন্য গরম জল বা অন্য কোনও প্রয়োজনীয় জিনিস চাইলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তিনি জানান, রোগীদের জন্য ব্যবহৃত অক্সিজেন পাইপলাইনে পিএসআই মাত্রা আজকের দিনে ৫৪ রয়েছে৷ তিনি জানান, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্ঢেম্বর পর্যন্ত আগরতলা বিমানবন্দর দিয়ে ৭,৩৩৫ জন যাত্রী রাজ্যে এসেছেন৷ তাদের মধ্যে ১.৪ শতাংশ যাত্রীর পজিটিভ ধরা পড়েছে৷ তিনি জানান, রাজ্যে কোভিড রোগীদের পরিষেবা প্রদান করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৩৬৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে সুুস্থ হয়েছেন ২২৫ জন এবং এখনও পজিটিভ রয়েছেন ১৩৯ জন৷ তিনি জানান, আজ পর্যন্ত রাজ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭,৮৩৩ জন৷ বর্তমানে পজিটিভ রয়েছেন ৭,৩৮১ জন৷ সুুস্থ হয়েছেন ১০,২৫৫ জন৷ রাজ্যে মৃত্যহার ০.৯৬ শতাংশ যা দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় সবচেয়ে কম৷ রাজ্যে পজিটিভিটি রেইট ৫.৬ শতাংশ৷ এখন পর্যন্ত মোট পরীক্ষা হয়েছে ৩,১৮,৫৮৪টি৷
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ড. শৈলেশ কুমার যাদব জানান, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় কেন সংক্রমণের হার বেশি তা জানতে সম্পতি একটি বিশ্লেষণ করা হয়৷ সেই অনুসারে আগরতলায় ৩,০০০টিরও বেশি বিয়ের অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সমাবেশ, সামাজিক দূরত্ব না মানা, মাস্ক ব্যবহার না করার মতো কারণগুলি চিহ্ণিত হয়েছে৷
তিনি জানান, প্রত্যেক রোগীদের ঠিকানা নিয়ে একটা স্যাটেলাইট ম্যাপিং করা হয়েছে৷ আগরতলা পুরনিগমের মধ্যে পজিটিভ রোগীদের ৭০ শতাংশ পুরনিগমের ১০টি ওয়ার্ড থেকে৷ সেই ওয়ার্ডগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ সচেতনতা বৃদ্ধি, টেস্টের হার বাড়ানো ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে৷ তিনি জানান, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় যারা হোম আইসোলেশনে রয়েছে তাদের মধ্যে যাদের কোমর্বিডিটি রয়েছে তাদের বাড়িতে পালস অি’মিটার দেওয়া হয়েছে৷ মেডিক্যাল টিম তৈরি করে তাদের সাথে যোগাযোগ করানো হচ্ছে৷ কোনও অসুুবিধা হলেই যেন যোগাযোগ করে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারেন৷ এছাড়াও হোম আইসোলেশনে যারা রয়েছে তাদের সকলকেই মেডিক্যাল কিট দেওয়া হয়েছে৷ করোনা মোকাবিলায় সকলকে সচেতন হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান৷ এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে জিবির ডেপুটি এম এস ডা. শংকর চক্রবর্তী ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন৷