কোকরাঝাড় (অসম), ৩০ আগস্ট (হি.স.) : পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবিতে ফের উত্তপ্ত হতে চলেছে বিটিসি-র আবহাওয়া। বড়োল্যান্ড টেরিটরিয়াল এরিয়া ডিস্ট্রিক্ট (বিটিএডি)-এর পরিচয় হবে বড়োল্যান্ড টেরিটরিয়াল রিজিওন (বিটিআর)। এমনই এক ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
রবিবার কোকরাঝাড়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিটিআর-চুক্তির দুই মধ্যস্থতাকারী যথাক্ৰমে পৃথ্বীরাজ নারায়ণদেব মেচ এবং থুলুংগা বসুমতারি কেন্দ্ৰীয় এবং রাজ্য সরকার বড়ো টেরিটরিয়াল রিজিওন চুক্তির নামে প্ৰবঞ্চনা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তাই সরকার শীঘ্রই চুক্তিটি কার্যকর না করলে তাঁরা আবার পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবিতে গোটা অসম উত্তাল করে দেবেন বলে হুঙ্কার দিয়েছেন। তাঁরা বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি বিটিআর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু এখন এই চুক্তির আসল রহস্য প্রকাশ পাচ্ছে।
পৃথীরাজ বলেন, ‘চুক্তির ৩ নম্বর দফা অনুযায়ী বড়ো অধ্যুষিত গ্রাম বা জনজাতিভুক্ত গ্রামগুলিকে অন্তৰ্ভুক্ত করার কথা উল্লেখ ছিল। এ জন্য প্রয়োজনীয় কমিশন গঠন গত সাত মাসেও হয়নি। এর পেছনে রহস্য রয়েছে’ বলে সন্দেহ ব্যক্ত করেছেন বক্তা। এছাড়া যে সব উগ্রপন্থী সংগঠনের ক্যাডার মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন তাদেরও কোনও ধরনের কর্মসংস্থাপনের ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি ভাতা প্রভৃতিও, অভিযোগ করেছেন পৃথ্বীরাজ নারায়ণদেব মেচ।
এছাড়া, দুই মধ্যস্থতাকারীর হুংকার, যদি এভাবে সরকার আমাদের অবহেলা করে তা হলে পুনরায় ‘ডিভাইড অসম ফিফটি-ফিফটি’ আওয়াজ তুলতে বাধ্য হব আমরা। ‘নো বড়োল্যান্ড, নো রেস্ট’ দাবি তোলা হবে আবার। এই দাবিতে আন্দোলন তীব্রতর করে তোলা হবে। ভারত সরকার এবং রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, ‘এনডিএফবি ক্যাডারদের বিরুদ্ধে সবধরনের মামলা প্রত্যাহার করে ভাতা প্রদান করুক সরকার।’ এছাড়া দুই মধ্যস্থতাকারী জানান, এ ব্যাপারে সরকার এখনও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় নৰ্থ-ইস্ট হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের পক্ষে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দাখিল করা হয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী অমিত শাহ, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের উপস্থিতিতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের পাশাপাশি নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-এর আহ্বায়ক ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা, বিপিএফ-প্রধান হাগ্রামা মহিলারি সহ (এনডিএফবি-আর)-এর সভাপতি রঞ্জন দৈমারি, এনডিএফবি (প্রগ্রেসিভ)-র গোবিন্দ বসুমতারি, লরেন্স ইসলারি, এনডিএফবি (ধীরেন)-এর ধীরেন বড়ো, এনডিএফবি (সং)-এর সচিব বি সাওরাইগৌরা, নিখিল বড়ো ছাত্ৰ ইউনিয়ন (এবসু) সভাপতি প্রমোদ বড়ো-সহ আরও কয়েকজন সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর নেতারা।