করোনা আবহেই ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে অসমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তথ্য শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্বের

গুয়াহাটি, ১ আগস্ট (হি.স.) : ততদিনে করোনার ভয়াবহতা কেটে উঠবে। তাই আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে অসমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। আজ শনিবার জনতা ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে নয়া শিক্ষানীতি এবং করোনার দরুন বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলে কী করে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন সুষ্ঠুভাবে চালানো যেতে পারে সে সব ব্যাপারে নানা পরিকল্পনা কার্যকর সম্পর্কে কথা শুনিয়েছেন মন্ত্রী ড. শর্মা। 

কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া শিক্ষানীতিকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। নয়া নীতি অনুযায়ী দ্বাদশ শ্ৰেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক শিক্ষাকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। চারটি স্তরে বিভক্ত হবে নতুন শিক্ষানীতি। প্ৰাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত চারটি স্তরে বিভক্ত। ৩+৪+৫ শ্ৰেণিবদ্ধ শিক্ষার নতুন নামাকরণ করা হয়েছে। আগের তৃতীয়, চতুৰ্থ, পঞ্চম শ্রেণিকে এখন ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম বলে মান্য করা হবে। পঞ্চম শ্ৰেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জানান, নয়া নিয়মে স্নাতকের চার বৰ্ষ বাধ্যতামূলক নয়। স্নাতকের প্রথম বৰ্ষ ছাড়লে দেওয়া হবে সাৰ্টিফিকেট। দ্বিতীয় বৰ্ষ ছেড়ে দিলে দেওয়া হবে ডিপ্লোমা। তৃতীয় বৰ্ষ সম্পূৰ্ণ করলে দেওয়া হবে ডিগ্ৰি। চতুৰ্থ বৰ্ষ সম্পূৰ্ণ করলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীরা পাবেন গবেষণা ডিগ্ৰি। এর জন্য আগামী জানুয়ারি মাসে ব্লু প্ৰিন্ট তৈরি করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ৩০ আগস্টের মধ্যে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ শিক্ষক শিক্ষিকা এবং কৰ্মচারীদের বাধ্যতামূলক কোভিড টেস্ট করাতে হবে। প্রত্যেকের কোভিড রেজাল্ট ওয়েবসাইটে উপলব্ধ হবে। ২৩ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্টের মধ্যে কোভিড টেস্ট করাতে হবে, এর আগে নয়।

ড. শর্মা জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল কলেজ খোলার প্ৰারম্ভিক চিন্তাচৰ্চা করছে তাঁর শিক্ষা দফতর। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ভারত সরকার নেবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্ৰী বলেন, যেহেতু ৩১ আগস্ট পর্যন্ত স্কুল কলেজ বন্ধ থাকবে বলে কেন্দ্ৰীয় সরকার নির্দেশ দিয়েছে, তাই ১ সেপ্টেম্বর থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। অবশ্য, চতুৰ্থ শ্ৰেণি পর্যন্ত স্কুলগুলি খোলার চিন্তা করেছেন না বলে জানান, এক সেপ্টেম্বর থেকে অনিৰ্দিষ্টকাল পর্যন্ত চতুৰ্থ শ্ৰেণির স্কুল বন্ধ থাকবে।

এদিকে পঞ্চম শ্ৰেণি থেকে অষ্টম শ্ৰেণি পর্যন্ত শ্ৰেণিকক্ষে ক্লাস হবে না বলে জানিয়ে বলেন, কোনও ময়দান বা খোলা জায়গায় চারটি স্থান ভাগ করে সংশ্লিষ্টদের পঠনপাঠন চলবে। এক সঙ্গে ১৫ জন ছাত্ৰছাত্ৰীকেই কেবল পাঠদান করা যাবে। মন্ত্ৰীর মতে, শ্ৰেণি কক্ষের ভিতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসের সংক্ৰমণ হতে পারে। এককথায় প্রাচীনকালের গুরুকুলের মতো খোলা আকাশের নীচে শিক্ষা প্ৰদান করার ব্যবস্থা করা হবে। এতে শিক্ষিত যুবক যুবতীরা স্বেচ্ছায় শিক্ষা প্ৰদান করতে পারবেন। এর বিনিময়ে তাঁদের অন্তত একেকটি প্ৰমাণপত্ৰ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যক্তিগত বিদ্যালয়গুলিও এই ব্যবস্থা নিতে পারবে।

এছাড়া নবম এবং একাদশ শ্ৰেণির ছাত্ৰছাত্ৰীরা সপ্তাহে দুদিন স্কুলে আসবে। তারাও একটি শ্ৰেণিকক্ষে কেবল ১৫ জন করে বসে ক্লাস করতে পারবে। অন্যদিকে দশম এবং দ্বাদশ শ্ৰেণির ক্লাস হবে সপ্তাহে চারদিন। তিন ঘণ্টা করে তাদের ক্লাস চলবে, জানান শিক্ষামন্ত্ৰী। আরও জানান, নবম শ্ৰেণি যদি দিনের প্রথমার্ধে ক্লাস করে, তাহলে পরের বেলা একাদশ শ্ৰেণি ক্লাস করবে। ঠিক সেভাবে দশম শ্ৰেণির প্রথমার্ধে ক্লাস হয়, তাহলে দ্বাদশ শ্ৰেণির ক্লাস হবে পরে বলে। পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ যাতে না হয় সেজন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, ষাণ্মাসিক ব্যবস্থায় চূড়ান্ত বৰ্ষের শ্ৰেণিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। বলেন, নিজ নিজ এলাকার কলেজগুলোর ছাত্ৰছাত্ৰীরা ক্লাস করতে পারবে। গুয়াহাটিতে অধ্যয়নরত ছাত্ৰছাত্ৰী যদি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে থাকে, তাহলে তারা তাদের এলাকার কলেজে ক্লাস করতে পারবে। রাজ্য সরকারের Ssa.assam.gov.in এবং  sopschoolplanningassam.gmail.com এই দুই ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কিত নীতিনিৰ্দেশনা উপলব্ধ হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *