নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম/পানিসাগর/ তেলিয়ামুড়া, ১৩ জুলাই৷৷ পৃথক স্থানে যান দূর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক মহিলা৷ গুরুতর আহত হয়েছেন আটজন৷ বিশালগড়, পানিসাগর এবং তেলিয়ামুড়ায় এই দূর্ঘটনা ঘটেছে৷ পুলিশ গাড়িগুলি আটক করেছে৷ মামলাও নেওয়া হয়েছে৷
বিশালগড়ের গোপীনগরে পথ দুর্ঘটনায় এক মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে৷ জানা যায়, জামাইয়ের বাইকে করে বক্সনগর থেকে বিশালগড়ে আসছিলেন শাশুড়ি৷ আসার পথে গোপীনগর এলাকায় বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যান শাশুড়ি৷ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর জওয়ানরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়৷ সেখান থেকে মহিলাকে উদ্ধার করে বিশালগড় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ কর্তব্যরত চিকিৎসক মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ জামাইয়ের বাইক থেকে পড়ে শাশুড়ির মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷
আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের পানিসাগর এলাকায় দুটি গাড়ির সংঘর্ষে দুজন গুরুতরভবে আহত হয়েছেন৷ঘটনার খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর জওয়ানরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে পানিসাগর হাসপাতালে নিয়ে যান৷ বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন৷ঘটনার বিবরণে জানা গেছে একটি সপার এবং অলটো গাড়ির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন রা দমকল বাহিনীকে খবর দেন৷ স্থানীয় লোকজন এবং দমকল বাহিনীর জওয়ানরা দুই যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই স্লিপার গাড়ি চালক পালিয়ে যায়৷প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন দুটি গাড়ি দ্রুত গতিতে চলছিল৷ সামনাসামনি আসার পর তারা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে পারেনি৷সে কারণেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে৷পানিসাগর থানার পুলিশ এ ব্যাপারে একটি মামলা গ্রহণ করেছে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷
যান দুর্ঘটনা যেন মানুষের পিছু ছাড়ছে না৷ প্রতিমুহূর্ত ত্রিপুরা রাজ্যের কোথাও না কোথাও যান দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে৷ যান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলও প্রতিনিয়ত লেগে আছে নিহত যান দুর্ঘটনায় যে হারে মৃত্যু হচ্ছে তার কোন রকম হিসেবেই রাখা হচ্ছে না৷ একদিকে করোনা মহামারী অন্যদিকে যান দুর্ঘটনা দ্রুতগতিতে ছুটে যাচ্ছে মানুষের পিছু৷সোমবার তেমনি একটি যান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক মহিলা৷ ঘটনা বিশালগড় গোপিনগর এলাকায়৷
ঘটনার বিবরণে জানা যায় ফুরসেনারা বেগম বয়স ৫০ বাড়ি পুটিয়া বক্সনগর এলাকায়৷ বিশালগড় নদীলাখ মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন৷ সেখানে দু’’একদিন থাকার পর উনার ছোট মেয়ে বাড়ি শান্তিরবাজার সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এসেছিলেন৷ যথারীতি ছোট মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য সোমবার সকালেই উঠে একদম তৈরি হয়ে নিয়েছিলেন ছোট মেয়ের বাড়ি যাওয়ার৷ সঙ্গে বর্তমান যে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সেই মেয়ের একটি কন্যা সন্তান বয়স দু’’বছরের সঙ্গী নিয়ে ছুটে যাচ্ছিলেন শান্তির বাজারের উদ্দেশ্যে কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারণে গাড়ি চলাচল কম ছিল অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ি না পেয়ে নিজের মেয়ের জামাইকে বলছিল বাইকে করে নদীলাখ থেকে শান্তিরবাজার ছোটমেয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য,সেই হিসেবে বড় মেয়ের জামাই কামাল হোসেন তার নিজের বাইকটি নিয়ে শাশুড়ি মা এবং নিজ কন্যা সন্তানকে নিয়ে শান্তিরবাজার উদ্দেশে রওনা দেন৷ কিছুক্ষণ যাওয়ার পর গোপিনগর এলাকার আসার পর উনার শাশুড়িমা কামাল হোসেন কে বলছিলেন বাইক থামানোর কথা সে হিসেবে কামাল হোসেন বাইকটি থামানোর পরিকল্পনা নেন৷ চট করে পিছন দিক থেকেই উনার শাশুড়ি মা উনার দু বছরের নাতনী সহ বাইক থেকে পড়ে যান৷ তড়িঘড়ি কামাল হোসেন তার মোটরবাইকটি দাঁড় করিয়ে নিজের কন্যা সন্তান সহ শাশুড়ি মাকে রাস্তায় থেকে উদ্ধার করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন বিশালগড় অগ্ণিনির্বাপক দপ্তরের৷ বিশালগড় অগ্ণিনির্বাপক দপ্তরের কর্মীরা খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে সেখান থেকে ফুরসেনারা বেগম কে দ্রুতবেগে নিয়ে আসেন বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে৷ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তার উপর চিকিৎসা পরিষেবা চালু করার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেন৷ কিন্তু চিকিৎসকের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার পূর্বেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মহিলা৷ চিকিৎসকরা তাকে উল্টিয়ে দেখেন তার পেছনদিকে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পাওয়ার ফলে মাথার মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে তার শিরা-উপশিরা স্তব্ধ হয়ে পড়ে যার ফলে সেই মৃত্যুর কাছে হেরে যায়৷ তার মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে আসে তার পুটিয়া থেকে তার আত্মীয় পরিজন এরা এবং তার দুই কন্যা সুমিত পরিবারের লোকেরা৷বর্তমানে ফুরসেনারা বেগমের দেহ বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে পোসমাডাম এর পর তার মৃতদেহ তুলে দেওয়া হবে তার আত্মীয় পরিজনের কাছে৷ উনার মৃত্যুতে সম্পূর্ণ পটিয়া এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷
অন্যদিকে, কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না পথদুর্ঘটনা৷ সোমবার আনুমানিক বেলা ২ টা নাগাদ তেলিয়ামুড়া চাকমা ঘাট বিশ্বকর্মা মন্দির সংলগ্ণ এলাকায় এক ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ঘটে৷ সংবাদে জানা যায় একটি ইকো গাড়ি কুমারঘাট থেকে আগরতলার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল বিয়ের বরযাত্রী নিয়ে৷ তেলিয়ামুড়া চাকমা ঘাট স্থিত বিশ্বকর্মা মন্দির এর কাছাকাছি আসলে গাড়িচালক গাড়ির গতি প্রচন্ড থাকার দরুন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট খাদে পড়ে যায়৷ ঘটনাস্থলে আহত হয় চালকসহ বরযাত্রী মোট ৬ জন৷ এদের মধ্যে দুলাল দত্ত (৫৫), দীপঙ্কর দত্ত (৩২), আশীষ দাস (চালক)(৩০), টুনু রাম দত্ত (৫৫), শুভ রাম দত্ত (৬০), রুপালি দত্ত (২১)৷ গুরুতর আহত হয়৷ ঘটনার খবর আসে তেলিয়ামুড়া অগ্ণিনির্বাপক দপ্তরে৷ এবং অগ্ণিনির্বাপক দপ্তরের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে এলে এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আগরতলা জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়৷ তারা হল চালক আশিস দাস ও টুনু রাম দত্ত৷ আর বাকি ৪ জনের চিকিৎসা চলছে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে৷ অন্যদিকে তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে৷

