নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জুলাই৷৷ শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় ভাবাবেগ ত্রিপুরায় ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে বাঁধা হয়ে দাঁড়াল৷ দীর্ঘ ১৫ বছরের সমস্যা এখনও জটিলতায় ঘিরে৷ স্থানীয় তিন পরিবারের আপত্তিতে পিছু হটেথে রাজ্য প্রশাসন৷ এখন নতুন প্রস্তাবে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকতে হবে৷ তবে নতুন প্রস্তাবে অনুমোদন না মিললে বিকল্প জমিতে মসজিদ নির্মাণ করে দিতে হবে৷ তবেই উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ সম্ভব৷ ঘটনা সিপাহিজলা জেলার কলসিমুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর এলাকার৷
মূলত, ওই এলাকায় বেড়া নির্মাণের ফলে মসজিদ কাঁটাতারের ওপাড়ে চলে যাচ্ছে৷ তবে ওই মসজিদ জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজের মধ্যে ভারতীয় ভূখণ্ডেই থাকছে৷ তবুও স্থানীয় তিনটি পরিবারের আপত্তিতে বেড়া নির্মাণের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে৷ সিপাহিজলার জেলাশাসক সিকে জমাতিয়ার কথায়, স্থানীয়দের সাথে কথা হয়েছে৷ তাঁদের সমস্ত সম্ভাবনা বোঝানো হয়েছে৷ সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে উদ্ভূত সমস্যা নিয়ে সিপাহিজলার জেলাশাসক বলেন, রহিমপুর এলাকায় একই সমস্যা হয়েছিল৷ ১১ মিটার স্থান কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে মাঝখানে মসজিদ ছিল৷ তাই, ওই মসজিদ অন্যত্র নির্মাণ করে দেওয়ার শর্তে কাজ শুরু হয়েছে৷ তিনি বলেন, সরকারি খরচে মসজিদ অন্যত্র গড়ে দেওয়া হবে৷ তার বদলে ওই স্থানে পূর্বের ছক অনুযায়ী কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে৷ তিনি বলেন, কলসিমুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর এলাকায় এমনই সমস্যা সমাধানে স্থানীয়দের সাথে আলোচনা হয়েছে৷ তাঁদের দাবি মেনে নতুন প্রস্তাব পাঠানো হবে কেন্দ্রের কাছে৷
এ-বিষয়ে সিপাহিজলার জেলাশাসক বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, ওই এলাকায় তিন পরিবার মসজিদ কাঁটাতারের ওপারে চলে যাক তাতে কিছুতেই রাজি হয়নি৷ তাই, ডাবল লাইন (কম্পোজিট রুফ ফেন্সিং) বদলে সিঙ্গল লাইন (সিঙ্গল রুফ ফেন্সিং) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে নতুন করে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে৷ তাতে সম্মতি না পাওয়া গেলে রহিমপুরের মতোই অন্যত্র মসজিদ গড়ে দেওয়া হবে৷ তাঁর কথায়, আপাতত জমির বন্দোবস্ত নেই৷ তাই, জমি খুঁজে বের করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া, সোনামুড়ার মহকুমাশাসক এবং অতিরিক্ত জেলাশাসককেও জমি খুঁজে বের করার জন্য বলা হয়েছে৷
জেলাশাসকের মতে, আগামী সোম কিংবা মঙ্গলবারের মধ্যে কেন্দ্রের কাছে ওই জটিলতা নিয়ে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হবে৷ তাতে অনুমোদন মিলতে অনেক সময়ের প্রয়োজন রয়েছে৷ একই সাথে জমি খুঁজে বের করা হবে৷ তাঁর বক্তব্য, খাস জমি পাওয়া গেলে সরকারি নিয়ম মেনে মসজিদ গড়ে দেওয়া হবে৷ তা না হলে ওয়াকফ বোর্ড ও ত্রিপুরা সরকার যৌথভাবে জমি ক্রয়ের ব্যবস্থা করবে৷ তাঁর দাবি, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জটিলতা রয়েছে৷ এখন এই জটিলতা নিরসনে কতটা সময়ের প্রয়োজন নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না৷

