পাথারকান্দি (অসম), ৩০ জুন (হি.স.) : করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি নির্বাচন ক্ষেত্র জুড়ে প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে অতিমারী করোনা ভাইরাসের হামলা। বিধায়ক, এক পুলিশকর্মীর পর এক মহিলা সহ আরও দুই ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন কোভিড-১৯ সংক্রমণে। অথচ তাঁদের কোনও ট্র্যাভেল হিস্ট্রি নেই। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মী এবং অন্যজন আশাকর্মী। একই সঙ্গে পাথারকান্দি কলেজ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের দেহেও করোনার জীবাণু ধরা পড়েছে।
এই খবর চাউর হলে গোটা পাথারকান্দি বিধানসভা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, পাথারকান্দি থানার ইউবি সিপাহি সাব উদ্দিন (৩৯) গত কয়োকদিন ধরে পাথারকান্দি সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুলের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। গত কয়েরকদিন আগে থানার সমস্ত কর্মীদের সঙ্গে সিপাহি সাব উদ্দিনেরও সোয়াব সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রথম থেকেই পুলিশ কর্মীটির শরীরে কোনও ধরনের করোনাজনিত লক্ষণ ছিল না। গতকাল তাঁর থ্রোট সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর এদিনই সন্ধ্যায় তাঁকে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে করিমগঞ্জ কোভিড হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। আক্রান্ত এই পুলিশ কর্মীর বাড়ি রাতাবাড়ি থানাধীন আনিপুরে।
অন্যদিকে পাথারকান্দি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীন স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে নিয়োজিত আশাকর্মী জনৈক অঞ্জুরানি দে (৫২)-র শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় তাঁকেও জেলা কোভিড হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি পাথারকান্দি থানার অন্তর্গত দক্ষিণ হৈতরখা গ্রামে। জানা গেছে, গত ২২ জুন এই আশাকর্মীর সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছিল।
তাছাড়া, একইভাবে গতকাল পাথারকান্দি কলেজ কোয়ারেন্টাইনের আরও তিন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর তাঁদেরকেও সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার জন্য করিমগঞ্জ কোভিড হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরা হলেন আনসারি শাহ (২২), হুসেন আহমেদ (২৫) এবং ফারুখ হুসেন (৩১)। তাদের বাড়ি যথাক্রমে পাথারকান্দি থানাধীন সলগই, বৈঠাখাল এবং কলকলিঘাটে।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পাথারকান্দিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৬-এ। করোনাতঙ্কিত স্থানীয়রা বলেছেন, কোনও ট্র্যাভেলিং হিস্ট্রি ছাড়াই পাথারকান্দির বিধায়ক সহ বাজারিছড়ার পুলিশ কর্মীর করোনায় আক্রান্তের পর এবার একই ভাবে নতুন করে এক পুলিশ ও আশাকর্মীর শরীরে করোনার ভাইরাস ধরা পড়েছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রশাসনের গরিমসি এবং স্বাস্থ্য বিভাগের খামখেয়ালির কারণে গোটা পাথারকান্দি এলাকায় করোনা ভাইরাস গোষ্ঠী সংক্রমণের পথে অগ্রসর হচ্ছে। তাই করোনার হামলা মোকাবিলা করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার পাশাপাশি সকলকে মুখে মাস্ক পরিধান করা, হাটবাজার বন্ধ রাখা এবং গাড়িঘোড়ায় ভিড় কমানোর জন্য জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পাথারকান্দির আতঙ্কিত সচেতন নাগরিকরা।