নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ জুন৷৷ বৃহস্পতিবার সকালে কয়েক মুহূর্তের ঘূর্ণিঝড় আগরতলার বলদাখাল এলাকা লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে৷ বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং বাজারের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ খবর পেয়েসদর মহকুমাশাসক সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন৷ পাশাপাশি, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক এবং বিধায়ক রতন চক্রবর্তীও এলাকায় ছুটে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নিয়েছেন, কথা বলেছেনপীড়িতদের সঙ্গে৷ তাঁদের হাতে সামান্য আর্থিক সাহায্যও তুলে দিয়েছেন তাঁরা৷ আজকের ঝড়ে একটি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছে৷
আজ সকাল ৯টা নাগাদ ওই ঘূর্ণিঝড় শুধুমাত্র বলদাখাল এলাকায় প্রভাব ফেলেছে৷ অন্যত্র এর প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর৷ এ-বিষয়ে আবহাওয়া দফতরের জনৈক আধিকারিক জানিয়েছেন,আজ সকালে বলদাখাল এলাকাতেই ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হয়েছিল৷ ওই এলাকায় কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট তছনছ করে দিয়ে ঘূর্ণিঝড় থেমে গেছে৷ ওই আধিকারিকের দাবি, অন্যত্র ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাবপড়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়নি৷
এদিনের ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল, বেশ কয়েকটি বাড়ির ঘরের টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে৷ কয়েকটি বাড়ির পাকা দেওয়ালে ফাটল ধরেছে৷ চন্দ্রপুর বাজারে কয়েকটি দোকানের টিনের চাল ঘূর্ণিঝড়েউড়িয়ে নিয়ে গেছে৷ বাজারে একটি টমটম (ই-রিকশা) দাঁড়ানো ছিল৷ ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে টমটমটি ভেঙে চুড়মার হয়ে গছে৷ টমটম চালক সামান্য আহত হয়েছেন৷
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব নিয়ে বলদাখাল এলাকার বাসিন্দা সুজিত কুমার দেবনাথ বলেন, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘূর্ণিঝড় সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে৷ বৃদ্ধ মা ঘরের বাইরে যাচ্ছিলেন, এমন সময় ঝড়ে তিনি সামান্যআঘাত পেয়েছেন৷ তবে, ঘরের চাল ঘূর্ণিঝড় উড়িয়ে নিয়ে গেছে এবং দেওয়ালে সামান্য ফাটলও দেখা দিয়েছে৷ সুজিতবাবুর প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ওই বাড়িতে থাকা এখন নিরাপদ নয়৷ অপর এক বাসিন্দা বিমল দাসবলেন, আজ সকালের ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ির একটি ঘর ভেঙে চুড়মার হয়ে গেছে৷
টমটম চালক অপু সূত্রধর আক্ষেপ করে বলেন, চন্দ্রপুর বাজারে এসে দাঁড়াতেই দেখি জোরে বাতাস বইছে৷ তাই টমটম বন্ধ করে দাঁড়াতেই মুহূর্তের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পুরো তছনছ করে দিয়েছে৷ ঝড়ের প্রকোপে টমটমভেঙে চুরমার হয়ে গেছে৷ তাতে নিজেও মাথায় ও হাতে আঘাত পেয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন৷ একই কথা বলেন ব্যবসায়ী নন্দন মজুমদারও৷ তাঁর কথায়, দোকানের চাল ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে৷ তাতে সমস্তজিনিসপত্র বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেয়ে সদর মহকুমাশাসক অসীম সাহা ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছেন৷ সদর মহকুমাশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ ক্ষয়ক্ষতির হার নিরুপণ হচ্ছে৷ তবে, সাময়িক আর্থিক সাহায্য এখনই প্রদান করা হয়েছে৷ এদিকে, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক এবং বিধায়ক রতন চক্রবর্তী খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷
সাংসদ প্রতিমা ভৌমিকের কথায়, সকালে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে৷ দুপুরের মধ্যেই সাময়িক আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর দাবি, করোনা-র প্রকোপে দেশ এবং রাজ্য গভীর সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে৷ এরইমধ্যে প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলা করতে হচ্ছে৷ তবে প্রশাসন ভীষণ সক্রিয় রয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের সহায়তায় কোনও ত্রুটি হবে না৷ তাঁর কথায়, ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ শুরু হয়ে গেছে৷ সাময়িকআর্থিক সাহায্যও প্রদান করা হচ্ছে

