নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ জুন৷৷ করোনা-র সমাপ্তি কবে, কেউ জানে না৷ ফলে, আমাদের রাজ্যে এখন বিপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে৷ মঙ্গলবার আগরতলার প্যারাডাইস চৌমুহনিতে এভাবেই ত্রিপুরা সরকারকে বিঁধলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ করোনা-র প্রকোপে দুস্থদের সহায়তায় গুচ্ছ দাবি নিয়ে আজ সারা ত্রিপুরায় মানবশৃঙ্খল করেছে সিপিএম৷ আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা৷ বিনামূল্যে রেশন, আর্থিক সহায়তা, বেকার ভাতা, রেগায় শ্রমদিবস বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে সিপিএম এদিন আন্দোলন করেছে৷ ওই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দাবি পেশ করার সাথে ত্রিপুরা সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ ছাড়েননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷
এ-বিষয়ে আজ মানিক সরকার বলেন, করোনা-র প্রকোপে দীর্ঘদিন ধরে কোনও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হয়নি৷ তাই গত ২ জুন ভিডিও কনফারেন্সে পলিটব্যুরোর বৈঠকেই আজকের কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছিল৷ তাই, সারা দেশের সাথে সাযুজ্য রেখে ত্রিপুরায় বিভিন্ন প্রান্তে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে৷ তাঁর দাবি, আমাদের দেশে কর ছাড় পান যাঁরা সেইসব দুস্থদের সংখ্যা অনেক৷ এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁদের মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল ৬ মাস দেওয়া হোক৷ শুধু তা-ই নয়, সংসার প্রতিপালনে তাদের পরিবারপিছু সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে ৬ মাস দেওয়া উচিত৷
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, দেশের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদরা সাফ বলেছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে৷ না হলে, বাজারে গতি আসবে না৷ সাথে তিনি যোগ করেন, পরিযায়ী শ্রমিক সহ সমস্ত শ্রমিকদের রেগায় ২০০ দিনের কাজ সুনিশ্চিত করতে হবে৷ পাশাপাশি, মজুরিও বৃদ্ধি করতে হবে৷ তিনি বলেন, করোনা-র প্রকোপে লকডাউনে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন৷ তারা এখন বেকার হয়ে ঘরে বসে আছেন৷ নতুন করে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি না হওয়ায় আগের বেকাররাও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন৷ তাই তাদের, বেকারভাতা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তিনি৷ শুধু তা-ই নয়, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিকে বিক্রির সিদ্ধান্তের তীব্র আপত্তি জানান তিনি৷
মানিক সরকার আজ করোনা মোকাবিলায় ত্রিপুরা সরকারের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন৷ তাঁর অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের উপর নানাভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে৷ রক্তদান শিবির এবং দুস্থদের সহায়তায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে গেলে বিরোধীরা শাসক দলের রক্তচক্ষুর মুখোমুখি হচ্ছেন৷ তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ত্রিপুরায় ব্যভিচারী ব্যবস্থা চলছে৷ করোনা-র সমাপ্তি কবে, আমরা কেউ জানি না৷ ফলে, ত্রিপুরায় ইতিমধ্যে বিপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে৷ তাঁর কটাক্ষ, করোনা নেই বলে বগলদাবা করে লাভ হয়নি৷ এখন আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে৷ তিনি সুর আরও চড়িয়ে বলেন, করোনা-র চিকিৎসায় অস্বাভাবিক এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হচ্ছে রোগীদের৷ তাই সকলে নিরাপদে থাকুক এবং সকলকে সুরক্ষিত রাখুক, চাইছেন তিনি৷