BRAKING NEWS

বাবা ও সৎ মায়ের অমানবিক নির্যাতনের শিকার অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরতা মেয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ১০ জুন৷৷ মায়ের মৃত্যুর পর থেকে বাবা ও সৎ-মায়ের অত্যাচারে দিন কাটাচ্ছিল অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া নাবালিকা৷ এখন মাসির সহায়তায় মামার বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছে৷ হৃদয়বিদারক এই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নাবালিকা নিজেও শিউরে উঠেছে৷


ধলাই জেলার আমবাসা মহকুমার রাখালটিলা জয়ন্তীপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিজয় নমঃশুদ্র এবং তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে৷ শুধু তা-ই নয়, মামার বাড়ি থেকে মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷


নির্যাতিতা নাবালিকার মাসি জানিয়েছেন, দেড় বছরের মেয়েকে রেখে বিনা চিকিৎসায় তার মা যমুনা নমঃশূদ্র মারা যান৷ এর পর তার বাবা বিজয় নমঃশূদ্র পুনরায় বিয়ে করেন৷ দ্বিতীয় পক্ষের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তাদের৷ মাতৃহীনা মেয়ের প্রতি তার ঔরসজাত বাবা কোনও যত্ন নেননি কোনওদিন৷ বরং তার সৎ মা খাবার না দিলেও বাবা হিসেবে কখনও প্রতিবাদ করেননি তিনি৷ উল্টো, স্বামীর প্রশ্রয়ে সৎ মা ওই নাবালিকা মেয়েকে অকথ্য অত্যাচার করতেন৷


নাবালিকার মাসি বলেন, কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ত্রিপুরার বাইরে ছিলাম৷ এখন লকডাউনে বহিঃরাজ্যে কাজ নেই৷ তাই বাড়ি ফিরে এসেছি৷ রাজ্যে ফিরে বোনের মেয়ের খোঁজ নিতে গিয়ে তার প্রতি নির্যাতনের কাহিনি শুনে শিউরে উঠেছি৷ তিনি বলেন, বিজয় নমঃশূদ্রের সাথে তেলিয়ামুড়া থানাধীন নেতাজিনগর এলাকার নিবাসী মহেশ সরকারের মেয়ে যমুনা সরকারের সামাজিক রীতিনীতি মেনে বিয়ে হয়েছিল৷ কিন্তু স্ত্রী-র মৃত্যুর পর থেকে মেয়ের প্রতি চরম উদাসীন হয়ে পড়েন তার জন্মদাতা পিতা৷


নাবালিকাও নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেছে, একবেলা দুমুঠো ভাত জুটলে পরের বেলায় খাবার মেলেনি৷ ফলে, বাধ্য হয়ে পাড়ায় ঘুরে যেখানে যেমন পেয়েছি খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্তি করেছি৷ এমন অনেক দিন শুধু মিডডে-মিল-এর খাবার খেয়ে সারাদিন কাটিয়েছি৷ তাই, মাসি আমাকে মামার বাড়িতে নিয়ে এসেছে৷ অবশ্য তাতেও শান্তি নেই তার৷ কারণ, বাবা টেলিফোনে মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বার বার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷
ওই নাবালিকার মাসি এবং মামার বাড়ির সদস্যরা প্রশাসনের কাছে এ-বিষয়ে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন৷ কারণ মেয়েকে বাবার কাছে পাঠালে পুনরায় নির্যাতনের শিকার হবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *