নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ জুন৷৷ ত্রিপুরায় ১০৩২৩ জন শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের জন্য কারা দায়ী, খুঁজে বের করতে কমিশন গঠনে সম্মতি দিল ত্রিপুরা মন্ত্রিসভা৷ অবসরপ্রাপ্ত বিচারক গৌতম দেবনাথকে কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হবে৷ আগামী ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হবে তাঁকে৷ প্রসঙ্গত, ১০৩২৩ ইস্যুতে গত ২৩ মার্চ বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ওই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিলেন৷ তিনি ঘোষণা করেছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে কমিশন গঠন করা হবে৷ ১০৩২৩ শিক্ষকরা আজ কাদের জন্য বিপন্ন হয়েছেন, ওই কমিশন তাঁদের খুঁজে বের করবে৷
বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের অন্তিম দিনে উল্লেখপর্বে মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়ের ১০৩২৩ শিক্ষকদের অশিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে নোটিশের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, আদালতের মতামত জানার জন্য ত্রিপুরা সরকার সুপ্রিমকোর্টে আপিল করবে৷ তবে বাঁকাপথে কীভাবে তাঁদের চাকরি হয়েছিল তা খুঁজে বের করা খুবই জরুরি৷ তাঁর কথায়, ১০৩২৩ জন শিক্ষক আজ বিপন্ন৷ কিন্তু যাঁদের অপকর্মের জন্য ওই সব শিক্ষকের সর্বনাশ হয়েছে তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত৷ তাঁর প্রশ্ণ, কেন ওই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হয়েছে তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা দরকার৷ তাই তিনি কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন৷ এতে দোষীদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন৷
শিক্ষামন্ত্রীর ওই প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে লুফে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি কালবিলম্ব দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে কমিশন গঠনে সম্মতি দিয়েছিলেন৷ শীঘ্রই কমিশন গঠন করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা করেছিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ১০৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করার সময় তৎকালীন বাম সরকারের নিয়োগ নীতি ছিল৷ কিন্তু, নিয়োগ নীতির বলে যেমন খুশি নিয়োগ করা যায় না৷ তাই, ওই চাকরি বাতিলের জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে৷ তাঁর বক্তব্য, সুপ্রিমকোর্ট ওই নিয়োগ অবৈধ বলে রায় দিয়েছে৷ ফলে তার জন্য যাঁরাই দায়ী তাঁদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে৷
বিধানসভায় দাঁড়িয়ে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ ত্রিপুরা মন্ত্রিসভা ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি কেন বাতিল হয়েছে, কোথায় গলদ ছিল, কার জন্য ওই সকল শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন তা খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশনে সম্মতি দিয়েছে৷ সে মোতাবেক অবসরপ্রাপ্ত বিচারক গৌতম দেবনাথকে কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হবে৷ এ-বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ আজ সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত বিচারক তদন্ত করবেন এবং সাক্ষ্য-বাক্য নেবেন৷ তাঁকে ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ এরই মধ্যে তিনি ত্রিপুরা সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন, জানান শিক্ষামন্ত্রী৷