গুয়াহাটি, ৭ জুন (হি.স.) : মাধ্যমিকে একজন শিক্ষার্থী পাশ করেনি, অসমের এমন ১৭টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সৰ্বশিক্ষার অধীনে ২৯,৭০১ জন টেট শিক্ষকের চাকরির কাৰ্যকাল ৬০ বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে। তাঁদের ওপর থেকে অস্থায়ী শব্দটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের ৪৬,১১৩ জন শিক্ষক আজ থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের সমপৰ্যায়ের সুষোগ-সুবিধা পাবেন। রাজ্য ক্যাবিনেটে গৃহীত এমন বহু সিদ্ধান্তের তথ্য দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
রবিবার বিকেলে দিশপুরে জনতা ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের টেট শিক্ষক, ঠিকাভিত্তিক এবং স্টেটপুল শিক্ষকদের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূৰ্ণ ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা। এক এক করে তিনি জানান, সৰ্বশিক্ষার অধীনে যে ২৯,৭০১ জন টেট শিক্ষক রয়েছেন তাঁরা বেতন পান পে-স্ক্যালে সরকারি শিক্ষকের সমহারে। প্ৰথম নিযুক্তির সময় তাঁদের ১০০ শতাংশ বেতন ভারত সরকার বহন করত। এখন ১৫ হাজার পর্যন্ত ভারত সরকার এবং বাকি বহন করে রাজ্য সরকার।
সদ্য অনুষ্ঠিত রাজ্য ক্যাবিনেট আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, টেট শিক্ষকদের চাকরির কাৰ্যকাল বহাল থাকবে ৬০ বছর পর্যন্ত। তাছাড়া তাঁদের কার্যক্ষেত্রে অস্থায়ী শব্দটি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে বলেন, কিছু ক্ষেত্রে আনুপাতিক সুবিধা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা হয়েছে। এই সকল শিক্ষকের বেতন বাড়বে সরকারি কৰ্মচারীদের মতো। সরকারি শিক্ষকরা যেভাবে ডি.এ পান, সেভাবে টেট শিক্ষকরাও পাবেন। ছুটির ক্ষেত্ৰেও সরকারি শিক্ষকদের মতো সুবিধা পাবেন তাঁরা।
মন্ত্রী জানান, এখন থেকে টেট শিক্ষকরাও ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন। এক কথায় সরকারি শিক্ষক এবং টেট শিক্ষকদের মধ্যে কোনও পাৰ্থক্য থাকবে না। নিয়মিত না হওয়া পর্যন্ত যতটুকু সুবিধা দেওয়া যায় ততটাই পাবেন তাঁরা।
এছাড়া, অসম সরকারের ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত, ১১,২০৬ জন স্টেটপুল শিক্ষকরাও রেগুলার পে-স্ক্যাল পাবেন। ১ জুন থেকে তা কাৰ্যকর হবে। এই স্টেটপুল শিক্ষকদেরও চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, জানান শিক্ষামন্ত্রী ড. শর্মা।
তিনি আরও জানান, রাজ্যের বিভিন্ন হাইস্কুলে যে ৫,২৪৩ জন ঠিকাভিত্তিক শিক্ষক আছেন, প্ৰথম অবস্থায় তাঁদেরকে ১০ হাজার টাকার মাসোহারা ১১ মাসের জন্য দেওয়া হয়েছিল। পরবৰ্তীতে ১৫ হাজার এবং পরে তা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এই সকল শিক্ষককেও রেগুলার পে-স্ক্যাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ক্যাবিনেটে। তাঁরাও নিয়মিক শিক্ষকের সমপৰ্যায়ের বেতন পাবেন। তাছাড়া এই সব শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে ৩ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। জানান, শিক্ষকদের প্ৰাদেশীকরণ, অনিয়মিয়ত শিক্ষকের কাজও দ্ৰুতগতিতে এগোচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব বলেন, নির্বাচনের আগে রাজ্যের শিক্ষককুলকে বিজেপি যে সব প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিল, সে সব পূরণ হতে চলেছে।
তিনি জানান, গত বছর হাইস্কুল শিক্ষান্ত বা মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীৰ্ণ ছাত্ৰছাত্ৰীদের সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দরাম বরুয়া পুরস্কারের ল্যাপটপ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। তবে এবারের কৃতী ছাত্রছাত্রীদের ল্যাপটপের পরিবর্তে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী ড. শর্মা।
এদিকে রাজ্যের ১৭টি স্কুলকে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, এই সব স্কুলের একটি ছাত্র বা ছাত্রী মাধ্যমিক (হাইস্কুল শিক্ষান্ত) পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের শিক্ষা দফতর। তবে ওই সব স্কুলের ছাত্ৰছাত্ৰীদের নিকটবর্তী স্কুলে নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়া বন্ধ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের রাজ্যের বিভিন্ন প্ৰান্তে বদলি করা হবে, জানান শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।