BRAKING NEWS

বরাক উপত্যকায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ২৫

শিলচর (অসম), ২২ মে (হি.স.) : কোভিড-১৯ এর কবলে অসম। এ থেকে বিচ্ছিন্ন নয় বরাক উপত্যকা। এই উপত্যকার তিন জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। প্রথমে দিল্লির মরকজ নিজামউদ্দিনে তবলিগ-ই জামাত এবং পরে আজমির শরিফ থেকে বাসে আগত যাত্রীদের মধ্যে দশ জনের শরীরে করোনা পজিটিভের তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। এবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাইরের রাজ্য থেকে আগত লোকদের মাধ্যমে বরাক উপত্যকায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৫। 

শুক্রবার শিলচরের কোয়রান্টাইন সেন্টারে অবস্থানরত দুজনের শরীরে করোনা সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে৷ তাঁদের একজন শিলচরেরই বাসিন্দা এবং অপরজন  হাইলাকান্দি জেলার। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজ ৩টা ১০ মিনিটে টুইট করে জানিয়েছিলেন, এই দুজনকে নিয়ো রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৬ (এর পর অবশ্য শোণিতপুরের নতুন আক্রান্তদের নিয়ে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২২২)৷ 

এক সূত্রে জানা গেছে, আজকের দুই আক্রান্তের মধ্যে একজন হাইলাকান্দি জেলার কাটলিছড়ার ৬২ বছরের এবং অপরজন কাছাড় জেলার শুকতারা এলাকার ৭২ বছরের জনৈক প্রবীণ ব্যক্তি।

এদিকে, কাছাড় জেলার সর্বাধিক ১৬ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার বিপরীতে করিমগঞ্জ জেলার ৬ জন এবং হাইলাকান্দি জেলার ২ জন লোক আক্রান্ত হয়েছেন। অপরদিকে আজমির থেকে আগত শোণিতপুরের গাড়ি চোর ফরিদুল ইসলামের নাম কাছাড় জেলার আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত করে বরাক উপত্যকার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৫-এ। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কোভিড সেলে ২৫ জন করোনা আক্রান্ত  রোগীর মধ্যে একমাত্র মৃত্যু হয়েছে এক জনের, তিনি হাইলাকান্দি জেলার ফইজুল হক। কাছাড় জেলার আক্রান্ত ১৬ জনের মধ্যে ৯ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। বর্তমানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজের কোভিড ওয়ার্ডে ১৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. ভাস্কর গুপ্ত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, দ্রুতগতিতে বরাক উপত্যকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার ২৪ ঘণ্টায় কাছাড় জেলায় ৫২৬ জনের সোয়াব সংগ্রহ করার বিপরীতে বৃহস্পতিবার ৩২৩ জন লোকের সোয়াব পরীক্ষা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের কোভিড ল্যাবে মোট ৪,৫৪২ জনের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এদিকে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাইরের রাজ্য থেকে বাস এবং ট্রেনে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন যাত্রী আসছেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি কোয়ারেন্টাইন রয়েছে। তবে যে গতিতে বাইরের রাজ্য থেকে মানুষ আসছেন  এতে আগামীতে এলাকাভিত্তিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প থাকবে সরকারের কাছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে কাছাড়ের সাতটি বিধানসভা এলাকায় আলাদা করে কমিটি গঠনও করা হয়েছে। জেলার কোথায় কোয়ারেন্টাইন গড়ে তোলা উচিত এ বিষয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। 

বরাক উপত্যকার তিন জেলায় বাইরের রাজ্য থেকে যারা আসছেন তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাদেরকে সরকারি কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর দায়িত্বে রয়েছে কাছাড় জেলা প্রশাসন। বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের  জেলায় ঢোকার আগেই লালারস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য শিলচরের রামনগরে সোয়াব কালেকশন সেন্টার গঠন করা হয়েছে। কোনও যাত্রীর লালা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবে শিলচরের বরিষ্ঠ ডাক্তার এবং উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত কমিটি। 

রাজ্যের বাইরে থেকে আগতদের শরীর থেকে কোভিড- ১৯ যাতে বরাক উপত্যকায় ছড়িয়ে না পড়ে এর জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *