নিজস্ব প্রতিনিধি, বিলোনীয়া, ১৯ মে৷৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ত্রিপুরা থেকে ফের একটি ট্রেন বিহারের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে৷ বিলোনিয়া স্টেশন থেকে ১,৭৯০ জন পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ওই ট্রেন বিহারের গয়া পর্যন্ত যাবে৷ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিলোনিয়া, শান্তিরবাজার এবং সাব্রুম এলাকায় বিভিন্ন ইটভাট্টা এবং অন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওই ট্রেন আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে রওয়ানা দিয়েছে৷ দক্ষিণ ত্রিপুরার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, বিলোনিয়ার মহকুমাশাসক মানিকলাল দাস সবুজ পতাকা নেড়ে ওই শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের যাত্রা সূচনা করেন৷
লকডাউনে সারা দেশে প্রচুর মানুষ আটকে পড়েছেন৷ বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন৷ কেন্দ্রীয় সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে৷ ফলে, ত্রিপুরা সরকারও রাজ্যে আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পাঠানোর উদ্যোগ নেয়৷ গত রবিবার একটি ট্রেন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিহারের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছিল৷ আজ আরেকটি ট্রেন বিলোনিয়া থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিহারের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে৷ এতে ১,৭৯০ জন যাত্রী রয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে ৩১৩টি শিশুও আছে৷ ট্রেনে ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পাঠানোর সমস্ত খরচ ত্রিপুরা সরকার বহন করছে৷
এই সফরে পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন, সেই বিষয়ে খতিয়ে দেখতে দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক, বিলোনিয়া মহকুমাশাসক ও পদস্থ আধিকারিকরা মঙ্গলবার সকালে বিলোনিয়া রেল স্টেশনে গিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতির খোঁজখবর নেন এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন৷ শুধুমাত্র যাত্রীদের খাবার বন্দোবস্ত করার জন্য বিলোনিয়া থেকে রওনা হয়ে ওই ট্রেন নির্দিষ্ট দু-একটি স্টেশনে দাঁড়াবে৷ অন্য কোনও স্টেশন থেকে কোনও যাত্রী উঠতে পারবেন না৷ ওই ট্রেনে ২৪টি বগি রয়েছে৷ পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীদের ট্রেনে বসার বন্দোবস্ত করা হয়েছে৷
এদিন ট্রেনের যাত্রা শুরু হওয়ার আগেই পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে খাবার, জলের বোতল এবং প্রত্যেককে মাস্ক দেওয়া হয়েছে৷ দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে সবুজ পতাকা নেড়ে ওই শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের নেড়ে সূচনা করেন জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, মহকুমাশাসক মানিকলাল দাস এবং পুরমাতা শুক্লা দেব সরকার৷ জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং মহকুমা শ্রম পরিদর্শকও এদিন রেল স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন৷ ট্রেনে ওঠার আগে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হয়েছে৷
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগামীকাল আগরতলা রেল স্টেশন থেকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে আরেকটি ট্রেন রওনা হবে৷ জিরানীয়া, আমবাসা এবং কুমারঘাট রেল স্টেশনে এই ট্রেনটি দাঁড়াবে৷ আগামী ২২ মে আসাম থেকে একটি ট্রেন চালানোর প্রয়াস নেওয়া হয়েছে৷ এছাড়া আগামী ২৫ এবং ২৬ মে ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশ্যে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যে ৩ জন বিদেশী লকডাউনের কারণে আটকে ছিলেন৷ এরমধ্যে ২ জন গ্রীসের এবং ১ জন জর্ডানের নাগরিক৷ জর্ডানের নাগরিক সড়কপথে রওনা হয়েছেন৷ আগামীকাল ১,৮২৩ জন যাত্রীকে নিয়ে তেলেঙ্গানা থেকে একটি ট্রেন ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, বহির্রাজ্যে আটকেপড়া ৬,৯৬৫ জন রাজ্যের নাগরিককে ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে মোট ২ কোটি ৪৭ লক্ষ ৩২ হাজার ৬২০ টাকার আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে৷