গুয়াহাটি, ১৭ মে (হি.স.) : বহিঃরাজ্য থেকে অসমে নাগরিকরা যতই আসছেন ততই বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার ছয়জনের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের পর আজ (রবিবার) ফের একজনের সোয়াবে পজিটিভ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা হল, নতুন আক্রান্ত মাত্র নয় (৯) বছরের এক শিশু। রবিবার বেলা ১.৪০ মিনিটে এই দুঃসংবাদ টুইট করে জানান রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
মন্ত্রী জানান, রাজ্যে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬-এ দাঁড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। দুজনের মৃত্যু হয়েছে এবং সক্রিয় রোগী ৫১ জন। এছাড়া দুজন ছিলেন অভিবাসী, অন্য রাজ্য থেকে এসেছিলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ৯৬ জন রোগীর মধ্যে এক গুয়াহাটিরই ৩৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস হামলা করেছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বিগ্ন মন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, অসমে ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে করোনা। এখন পর্যন্ত ৯৬ জন আক্ৰান্ত হলেও এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তিনি। পরিস্থিতির ওপর লক্ষ রেখে ৬৫ বছরের ওপর এবং ১০ বছর বয়সের নীচে শিশুদের ঘরের ভিতরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মন্রীূ । তাঁ আবেদন, বৰ্তমান পরিস্থিতিতে এটা সব চেয়ে বেশি প্ৰয়োজন। তাই সবাইকে নিজেদের ঘরে সুরক্ষিত অবস্থান করতে আহ্বান জানিয়ে অযথা ঘরের বাইরে এসে বিপদ না বাড়াতে রাজ্যবাসীর প্রতি আবেদন জানান তিনি।
এদিকে যোরহাটের জেলাশাসকের কাছে জানা গেছে, আজ যে শিশুর শরীরে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে, গত ১৪ মে সে তার মা দাদা ও অন্যদের সঙ্গে দিল্লি থেকে এসেছে। মাসতুতো দাদা শিবসাগরের ১৯ বছরের আবদুল শামিমও করোনা-আক্রান্ত। গতকাল গভীর রাতে আবদুল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী ড. শর্মা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল শামিমের বাড়ি শিবসাগরের গেলেকি এলাকায়। শামিম ও মায়ের সঙ্গে ৯ বছরের শিশু ফারহান আখতার দিল্লি থেকে একটি ট্র্যাভেলার গাড়িতে এসেছিল। ফারহানদের বাড়ি যোরহাট টাউনের পুজাডুবির ৩ নম্বর ওয়াৰ্ডে। জেলাশাসক জানান, যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আজকের শিশু সহ চারজন করোনা-আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে।
জেলাশাসক জানান, শামিমের সঙ্গে একই গাড়ির সব যাত্রী যেমন চড়াইদেও বড়পথার এবং যোরহাট শহরের বাসিন্দাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আট (৮) জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপসৰ্গ পাওয়া যায়নি। আক্রান্তদের কাজিরঙা ইউনিভার্সিটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শনিবার রাত পর্যন্ত যাঁদের শরীরে করোনা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে, তাঁদের একজন বিশ্বনাথ জেলার টোকাও গয়ারি (৬০) এবং অন্যজন শিবসাগর জেলার বাসিন্দা আবদুল শামিম (১৯)। বাকি দুজন কামরূপ মহানগর জেলার গুয়াহাটির বাসিন্দা রাকেশ সিং এবং বিনোদ রায়। গুয়াহাটির যে দুজনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে তারাও ফ্যান্সিবাজারের আলুগুদাম সম্পৃক্ত। তারা কালাপাহাড় এবং ফাটাশিলের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ছিলেন। উভয়কে রাতেই মহেন্দ্ৰমোহন চৌধুরী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই তথ্য দিয়ে মন্ত্রী জানান, বিশ্বনাথের রোগী টোকাও গয়ারিকে তেজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে।