ইটানগর, ১৬ মে (হি.স.) : জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী নাগা উগ্রপন্থী সংগঠন এনএসসিএন মুইভা গোষ্ঠীর সাৰ্জেণ্ট মেজর পুনাম ওয়াংসু সেনা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্ৰেফতার হয়েছে। অরুণাচল প্ৰদেশের পশ্চিম খোনসার তদানীন্তন বিধায়ক তিরন আবোহ, তাঁর ছেলে সহ ১১ জনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পুনাম ওয়াংসুও জড়িত বলে জানা গেছে।
প্রশাসনিক এক সূত্রের খবরে প্ৰকাশ, অরুণাচল পুলিশ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী লংডিং জেলার লংফাং নামের এক গ্ৰামের জঙ্গলে যৌথ অভিযান চালিয়ে এনএসসিএন মুইভা গোষ্ঠীর মেজর পুনাম ওয়াংসুকে তার অস্থায়ী শিবির থেকে আটক করে। সেনা হানার খবর পেয়ে জঙ্গলে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ওয়াংসু। কিন্তু তার চেষ্টা ব্যৰ্থ হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ মে সন্দেহভাজন এনএসসিএন জঙ্গিদের গুলি-হামলায় অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম খোনসার বিধায়ক তিরন আবোহ, তাঁর ছেলে সহ ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। ওই দিনের গুলি হামলায় আহত হয়েছিলেন আরও তিনজন। ঘটনা এদিন সকালের দিকে রাজ্যের তিরাপ জেলা সদর খোনসার বগাপানি এলাকায় সংঘটিত হয়েছিল।
এ ঘটনার পর ধরপাকড় হলেও পুনাম ওয়াংসুকে এনআইএ মোস্ট ওয়ান্টেড বলে ঘোষণা করেছিল। ওয়াংসুকে গ্ৰেফতার করার পর সেনা ও পুলিশ তাকে এনআইএ-র হাতে সমঝে দিয়েছে। ওয়াংসুর বিরুদ্ধে ৩০২/৩০৭ /৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এনআইএ এর আগে প্ৰাক্তন বিধায়ক তিরন আবোহ সহ ১১ জনকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রাজ্যের লংডিং জেলার এনএসসিএন মুইভা গোষ্ঠীর কমান্ডার ওয়াংটি জসাহাম সমেত অন্য আরও চারজনকে গ্ৰেফতার করেছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, সেদিন বিধায়ক তিরন আবোহ তাঁর ছেলে-সহ আত্মীয়স্বজন এবং অন্য মোট ১৪ জন সঙ্গী নিয়ে অসম থেকে খোনসায় তাঁর বাড়ি ফিরছিলেন। বিধায়কের কনভয় যখন খোনসা জেলার অন্তর্গত বগাপানির অজয় রাজকুমার চা বাগান এলাকার পাহাড়ি রাস্তায় পৌঁছে, তখন সন্দেহভাজন এনএসসিএন (মুইভা)-এর সশস্ত্র জঙ্গিরা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ধারা গুলি বর্ষণ করতে থাকে।
গাড়ির সামনের আসনে সিটবেল্ট বেঁধে বসেছিলেন বিধায়ক তিরন আবোহ। গুলি তাঁর ডান দিকে পাঁজর ভেদে করে বেরিয়ে যায়। এছাড়া গাড়ির ভিতরেই স্টিয়ারিঙের ওপর লুটে পড়েন বিধায়কের গাড়িচালক। ছেলে তার আসনেই রক্ত ঝরিয়ে প্রাণ হারায়। এভাবে গাড়ির ভিতরেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় বিধায়ক-সহ ১১ জনের। এছাড়া গুলিবিদ্ধ আহত হয়েছেন বিধায়কের দেহরক্ষী এবং অন্য দুজন।