BRAKING NEWS

এবার কৃষি, মৎস ও পশুপালনের উন্নতিতে ১ লক্ষ কোটির প্যাকেজ ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর

নয়াদিল্লি, ১৫ মে (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষিত ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানে শুক্রবার তৃতীয় অংশের ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ২০ লক্ষ কোটি টাকার ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পে এবার কৃষি, মৎস চাষ ও পশুপালনের জন্য একাধিক নয়া ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এদিন তিনি এই তিনি ক্ষেত্রের উন্নতির জন্য মোট ১১ দফা ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হল কৃষি ও কৃষি পরিকাঠামোর উন্নতিতে ১ লক্ষ কোটি টাকার নয়া প্যাকেজ ও খাদ্য পণ্য বিক্রির জন্য নয়া আইন আনার ঘোষণা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গোটা দেশ যে আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে তা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার নাম দেওয়া হয়েছে আত্মনির্ভর ভারত যোজনা। তিনি জানিয়েছিলেন, ধাপে ধাপে এই ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের উপাদানগুলি ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সেইমত গত বুধবার প্রথম দফায় ঘোষণা করেছিলেন নির্মলা। সেদিন মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি পরিযায়ী শ্রমিক এবং কৃষকদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

আজকের ঘোষণারও মুখ্য বিষয় হল: কৃষি। সেই সঙ্গে প্রাশসনিক সংস্কারের লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপও ঘোষণা করা হয় । শুক্রবার তৃতীয় অংশের ঘোষণায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, খাদ্যশস্য মজুত করার জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা করে জানান, এই অর্থ দিয়ে কোল্ড স্টোর, সাপ্লাই চেইন পরিকাঠামো ইত্যাদি এই তৈরি করা হবে। কৃষি সমবায় বা সেই ধরনের সংগঠনের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। ২ লক্ষ ছোট খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা এর ফলে উপকৃত হবে। তবে কোনও একটি শিল্প সংস্থাকে আলাদা করে অর্থ দেওয়া হবে না। এ ধরনের শিল্প তালুককে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদা যোজনা খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। ৫৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। আশা করা হচ্ছে এর ফলে মৎস্য সংক্রান্ত রফতানির অঙ্ক বেড়ে ১ লক্ষ কোটি টাকা হবে। প্রকল্প খাতে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার নৌকো দেওয়া হবে, মৎস্য বন্দর গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে তাঁদের বিমার ব্যবস্থাও করা হবে। তা ছাড়া বছরের অনেকটা সময় প্রাকৃতিক কারণে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে যেতে পারেন না। সেই সময়েও তাঁদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
পশুপালনের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হল পশুদের ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। সেই কারণে বিপণনের ক্ষেত্রেও চাষীরা সমস্যা পড়ছেন। তাই ১৩ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা খরচ করে ৫৩ কোটি পশু অর্থাৎ গরু, বাছুর, ছাগল, ভেড়াকে ১০০ শতাংশ টিকা দেওয়া হবে। এতে দুধ উৎপাদন বাড়বে। রফতানি বাজারও অটুট থাকবে।

ডেয়ারি শিল্পে পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়া হবে। এমনকি এক্ষেত্রে আধুনিক শিল্প কারখানা স্থাপনেও উৎসাহ দেওয়া হবে। যে সব প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ মানের ডেয়ারি প্রোডাক্ট বিদেশে রফতানি করা যেতে পারে।
ভেষজ চাষের জন্য চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। ২.২৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে ভেষজ উদ্ভিদ চাষে উৎসাহ দেওয়া হবে। গঙ্গার দু’ধারে ভেষজ উদ্ভিদ উৎপাদনে জোর দেওয়া হবে। গঙ্গার দু’ধারে এরকম ৮০০ হেক্টর জমি চিহ্নিত করা হবে।

মৌমাছি চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হবে। এই পদক্ষেপ গ্রামে মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। লকডাউনের জন্য কৃষি পণ্যের সাপ্লাই চেনে ক্ষতি হয়েছে। আলু, পেঁয়াজ, টমেটো চাষিদের ক্ষতি হয়েছে। কারণ প্রচুর কৃষিপণ্য পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় চাষীদের কৃষি পণ্যের পরিবহণের জন্য ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হবে। আর ৫০ শতাংশ ভর্তুকি কোল্ড স্টোরেজে মজুত করার জন্য দেওয়া হবে। মোট ৫০০ কোটি টাকা এজন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *