নিজস্ব প্রতিনিধি, বক্সনগর, ১৪ মে৷৷ ভারত-বাংলাদেশ ত্রিপুরা সীমান্তে উন্মুক্ত অংশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছেঊ তাতে সীমান্ত অপরাধ কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷ সিপাহিজলা জেলার এনসি নগর এবং শোভাপুর সীমান্তে দেড় কিলোমিটার এলাকায় জুনের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
এ-বিষয়ে সিপাহিজলার জেলাশাসক চন্দন কুমার জমাতিয়া বলেন, উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ভীষণ প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷ সে মোতাবেক জেলা ও মহকুমা প্রশাসন, পুলিশ এবং বিএসএফ আধিকারিকদের সাথে উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি৷ তাঁর কথায়, এনসি নগর এবং শোভাপুর এলাকায় দেড় কিলোমিটার উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া সংস্থাপনের জন্য নির্মাণ সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
তিনি জানান, ওই দেড় কিলোমিটার উন্মুক্ত সীমান্তে ডাবল লাইন (কম্পোজিট রুফ ফেন্সিং) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, আরও ছয় কিলোমিটার উন্মুক্ত সীমান্তে সিঙ্গল লাইন কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ওই ছয় কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ কারণ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ত্রিপুরার প্রস্তাবে অনুমোদন দেবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
এদিকে, ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের ওপারে রাজ্যের অংশে ফসল সংগ্রহে রাজ্য সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে কৃষকদের অনুমতি দেওয়া শুরু হয়েছে৷ এ-ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণে বিএসএফ, মহকুমা প্রশাসন এবং কৃষকদের সম্মতির ভিত্তিতে স্থির হবে৷ সিপাহিজলার জেলাশাসক চন্দন কুমার জমাতিয়া বলেন, দুজন কৃষককে অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ বাকিদের আলোচনার মাধ্যমে সময় নির্ধারণ করে অনুমতি দেওয়া হবে৷
প্রসঙ্গত, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ১৫০ গজের মধ্যে ত্রিপুরার প্রায় ১২০ বর্গ কিলোমিটার কৃষি জমি এবং মানুষের বসবাস করার জায়গা রয়েছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে জমির পরিমাণ ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার দ্বিগুণ৷ ১৯৭৫ সালের দু-দেশের দলিল অনুযায়ী সীমান্ত থেকে ১৫০ গজের মধ্যে দুই দেশের সম্মতি ছাড়া কোনও রকম প্রাচীর বা কোনও ধরনের নির্মাণ করা যাবে না৷ কেন্দ্রীয় সরকার চোরাকারবার এবং দুই দেশের মধ্যে উগ্রপন্থীদের যাতায়াত আটকাতে ভারতের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ ফলে, ত্রিপুরার প্রায় ৮৫৬ কিলোমিটার বাংলাদেশের সাথে সীমান্তে ৭,২০০ পরিবারের বাড়িঘর ওই কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে পড়েছিল৷ যার মধ্যে কিছু পরিবার বেড়ার এপারে চলে আসে৷ ত্রিপুরা সরকার তাদের পুনর্বাসন দিয়েছিল৷
সিপাহিজলার জেলা শাসক চন্দন কুমার জমাতিয়া বলেন, ত্রিপুরা সরকারের আবেদনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কাঁটাতারের ওপারে ত্রিপুরার অংশে ফসল কাটার অনুমতি দিয়েছে৷ সে-মোতাবেক ইতিমধ্যে দুই কৃষককে অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ বাকিদের জন্য মহকুমা প্রশাসন ও বিএসএফকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, স্থানীয়স্তরে বিএসএফ, মহকুমা প্রশাসন এবং কৃষকদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে অনুমতি দেওয়া হবে৷