গুয়াহাটি, ২ মে (হি.স.) : মহামারি করোনা সৃষ্ট আতঙ্ক ও লকডাউনজিনত পরিস্থিতিতে শনিবার অসমের ইলেকট্ৰনিক এবং প্ৰিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল। মহানগরের খানাপাড়ায় অসম প্ৰশাসনিক পদাধিকারী আইন মহাবিদ্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্যদের সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য-অর্থ-পূর্তমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারি, জলসম্পদ মন্ত্ৰী কেশব মহন্ত, আইন ও গুয়াহাটি উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য, কৃষিমন্ত্ৰী অতুল বরা, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী রিহন দৈমারি, মুখ্যমন্ত্ৰীর প্রেস অ্যাডভাইজার হৃষিকেশ গোস্বামী, আইন উপদেষ্টা শান্তনু ভরালি, মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ, পুলিশ-প্রধান ভাস্কজ্যোতি মহন্ত।
আজকের মতবিনিময় সভায় সম্পাদক ও অন্য সিনিয়র সাংবাদিকরা নিজেদের অভিজ্ঞতালব্ধ বেশ কিছু মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্ৰী তথা সরকারকে। মতবিনিময় সভার পর মুখ্যমন্ত্ৰী সনোয়াল বাইরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের জানান, ‘আজকের আলোচনায় সম্পাদক ও সাংবাদিকরা বহু পরামৰ্শ দিয়েছেন। সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক। বিবেকে বিবেচনা থাকে। সেই বিবেচনা বলেই সাংবাদিকরা ভবিষ্যত-সমাজকে এগিয়ে নেবেন, এই আশা করি। সাংবাদিকদের সব পরামর্শ আমরা ধৈর্য ও গুরুত্ব সহকারে শুনেছি। ছাপা মাধ্যমের নিউজপ্রিন্ট (কাগজ), ম্যাগাজিন তথা সাময়িকী বাজারে চলছে না বলে সম্পাদকরা জানিয়েছেন। লকডাউনের মধ্যে রাজ্যে সাংবাদিকরা প্ৰাণের ঝুঁকি নিয়ে প্ৰতিনিয়ত সংবাদ সংগ্ৰহ করে চলেছেন। তাঁরা প্ৰশংসার পাত্র।’ মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, দেশ তথা রাজ্যের এই দুর্যোগে সকলকে টিম হয়ে কাজ করতে হবে। সাংবাদিকরা এই লড়াইয়ে অশেষ কষ্ট করে সংবাদ সংগ্ৰহ করে চলেছেন, মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ।
আজকের আলোচনাসভায় দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে সনোয়াল বলেন, রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্ৰে কাজ শুরু হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবে কৃষি ক্ষেত্ৰে উৎপাদনও বাড়বে। বাড়বে উপাৰ্জন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের অর্থনীতি সবল করতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অত্যাবশ্যক সামগ্রী সহ জনসাধারণের যাতায়াতের ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর ৪৯,৪৬২টি গাড়ির চালাচ্ছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ এবং লকডাউন সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে বেশ কয়েকজন ধর্মীয় গুরু, বিশিষ্ট ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের নেতা, অর্থনীতিবিদ, শিল্পী-কলাকুশলির সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করে বহু পরামর্শ নিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মহামারি করোনা পরিস্থিতি সামলাতে শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক আইপিএস জিপি সিঙের নেতৃত্বে রাজ্যে একটি টাস্ক ফোৰ্স গঠন করা হয়েছে। তাঁরা দিন রাত এক করে পরিস্থিতি সামলাতে সুন্দর পরিকল্পনা তৈরি করে কাজে ঝাঁপিয়েছেন। বহিঃরাজ্যে আটক কর্মজীবী, শ্ৰমিক, ছাত্ৰছাত্ৰী, রোগী, পৰ্যটকরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে নিয়ম মেনে রাজ্যে আসতে পারবেন, জানান সর্বানন্দ সনোয়াল। মুখ্যমন্ত্ৰীর কথায়, বাইরে যাঁরা আটকে আছেন সকলকেই নিয়ম মেনে প্ৰশাসনকে কোভিড-১৯ টেস্ট রিপোৰ্ট দেখিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসজনিত জটিল পরিস্থিতিতে রাজ্যের সাধারণ মানুষ নিষ্ঠার সঙ্গে তৃতীয় মেয়াদের লকডাউন মেনে চলেছেন। তাই ৪ মে থেকে দু সপ্তাহের লকডাউনও রাজ্যবাসী মানবেন বলে আশা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, লকডাউনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতা করা হলেও সামাজিক ব্যবধানই হচ্ছে আসল কথা। মুখ্যমন্ত্ৰীর কথায় সোশ্যাল ডিসটেন্স অবশ্যই পালন করতে হবে সকলকে।