গুয়াহাটি, ৩০ এপ্রিল (হি.স.) : বিশ্ব তথা দেশজুড়ে মহামারি কোভিড-১৯ সংক্ৰমণের মধ্যেই অসমে অজানা রোগে আক্ৰান্ত হয়ে বহু শূকরের মৃত্যু হয়েছে। ফলে রাজ্যের শূকর পালকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও এক ধাপ বেড়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার অসমের ছয় জেলা যথাক্ৰমে ধেমাজি, ডিব্ৰুগড়, শিবসাগর, লখিমপুর, ধেমাজি, যোরহাট এবং বিশ্বনাথে শূকরের মাংস বিক্ৰি নিষিদ্ধ করেছে। রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেম এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, রাজ্যে এখন পৰ্যন্ত যে প্রায় ২০০০ শূকরের মৃত্যু হয়েছে, তারা ‘সোয়াইন ফিবার’-এ আক্ৰান্ত ছিল। বেসরকারি তথ্য মতে এই সংখ্যাটি আরও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, শুধু শিবসাগর জেলাতেই ১,১২৮টি শূকরের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুৰ্নীতি বিরোধী যুবশক্তি অসম নামের এক সংগঠন সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের ৬ জেলায় শূকরের মাংস নিষিদ্ধ করায় সরকারের তীব্ৰ সমালোচনা করেছে। সংগঠনের সভাপতি ধৰ্মকান্ত গগৈয়ের কথায়, উজান অসমে লক্ষ লক্ষ শূকর পালন করেই বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাঁদের পেটে-ভাতে না মেরে শূকরদের রোগ নিরাময়ের উপায় খুঁজে বের করার দাবি জানান তিনি। এছাড়া খুব শীঘ্ৰ বাজারে শূকরের দানাখাদ্য সহজলভ্য করার পাশাপাশি শূকর পালকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন ধর্মকান্ত।
এদিকে রাজ্যের কৃষিমন্ত্ৰী অতুল বরা বৃহস্পতিবার মাজুলি সফর করেছেন। কমলাবাড়ি ফেরি করে মাজুলির উত্তর কমলাবাড়ি সত্ৰে গিয়ে তিনি কৃষকদের সমস্যা খতিয়ে দেখেছেন। সেখানকার সত্ৰাধিকার জনাৰ্দন দেবগোস্বামীকে নিয়ে বৈষ্ণবদের সঙ্গে স্ট্ৰবেরি খেতেও গিয়েছেন মন্ত্ৰী। নিজের হাতে একটি স্ট্ৰবেরি খেয়ে উৎপাদকদের প্ৰশংসা করেন। সেখানে চাষের খেতে গিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার কথাও শোনেন মন্ত্রী বরা।
এদিন মাজুলির জেলাশাসকের কাৰ্যালয়ে কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়, শূকর পালকদের সমস্যা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন। তার পর এর একটি বিহিত ব্যবস্থা গ্ৰহণ কর হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কৃষি ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্ৰী। এদিকে ভিন রাজ্য থেকে ইতিমধ্যেই বহু যুবক নিজের রাজ্য অসমে ফিরে এসেছেন। তাদের কৃষি কাজে কৰ্মসংস্থাপন দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন কৃষিমন্ত্ৰী অতুল বরা।
প্ৰসঙ্গত, শূকরদের অজানা রোগ থেকে বাঁচাতে ২২টি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরও অজানা রোগে আক্ৰান্ত হয়ে রাজ্যে হাজার হাজার শূকরের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে সেখান থেকে শূকরদের নমুনা সংগ্ৰহ করে ভোপালের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল দেখে পরবৰ্তী ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে, জানান প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী অতুল।