নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ এপ্রিল৷৷ আমরা সবাই জানি মানব সভ্যতাকে বাঁচিয়ে রাখতে লকডাউন চলছে৷ তাতে মানুষের অসুুবিধা হচ্ছে৷ রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগে এবং বিভিন্ন জনের পরামর্শ মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ রাজ্য সরকার বিনামূল্যে রেশন দেওয়া, আর্থিক সাহায্য দেওয়া, খাদ্য সামগ্রী দেওয়া সহ নানা ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ৷
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গত ৯ এপ্রিল এডিসি’র মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে একটি চিঠি দিয়েছেন৷ তাতে এডিসি এলাকায় বিনামূল্যে রেশন দেওয়া সহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন৷ এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এডিসি এলাকায় বসবাসকারী মানুষের কল্যাণে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে৷ এই দুই মাসে এডিসি এলাকায় বসবাসকারী মানুষের কাছে ১৮০ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা পৌঁছে যাচ্ছে৷ যেমন, রাজ্যে মোট জব কার্ডধারীর সংখ্যা হলো ৬ লক্ষ ২৫ হাজার ৮২৫ জন৷ এরমধ্যে উপজাতি অংশের মানুষ আছেন ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৫৫ জন৷ এসপিরেশন্যাল ব্লকগুলিতে জব কার্ডধারী আছেন ৯৩ হাজার ৬৮৩ জন৷
বিভিন্ন কারণে তাদের মজুরি বাকি ছিল৷ তাদের সবার একাউন্টেই সব বকেয়া টাকা ঢুকেছে বা ঢুকছে৷ মোট ৯৪ কোটি টাকা বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এরমধ্যে এডিসি এলাকায় বসবাসকারী জব কার্ড হোল্ডারদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে গেছে ৪০ কোটি টাকা৷ ২০২০-২১ অর্থ বছরে শুধু মজুরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ কোটি টাকা দিয়েছে৷ এরমধ্যে এডিসি এলাকায় রেগা শ্রমিকদের জন্য ৪০ কোটি টাকা রয়েছে৷ ১২টি এসপিরেশন্যাল ব্লকে জব কার্ড রয়েছে ৯৩ হাজার ৬৮৩ জনের৷ এরমধ্যে একটিভ রয়েছে ৯২ হাজার ৮৯৯টি৷ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের প্রত্যেকের জন্য ৫০০ টাকা করে ব্যাঙ্ক একাউন্টে দেওয়া হয়েছে৷ মোট দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা৷
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এডিসি এলাকায় পানীয়জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আরডি, ডি ডব্লিউ এস বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করছে৷ এডিসি এলাকায় ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৮৬০ জন বিভিন্ন ভাতা পান৷
রাজ্য সরকার তাদের এপ্রিল ও মে মাসের জন্য অগ্রিম ভাতা মঞ্জুর করেছে৷ এজন্য ব্যয় হয়েছে ২৫ কোটি টাকা৷ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে এডিসি এলাকায় ৪৫ হাজার ৬৩৮ জন ১০০০ টাকা করে ভাতা পাবেন৷ তারা ইতিমধ্যেই ৫০০ টাকা করে পেয়েছেন৷ সবমিলিয়ে এজন্য ব্যয় হবে ৪ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা৷ রাজ্যে ৪০ হাজার নির্মাণ শ্রমিককে তিন হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ ইতিমধ্যেই ২১ হাজার ২২৭ জন তাদের প্রয়োজনীয় নথীপত্র জমা দিয়েছেন৷ এরমধ্যে এডিসি এলাকায় ভাতা পাবেন ৫৪৩২ জন৷ ব্যয় হবে ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা৷ অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা এবং প্রায়োরিটি হাউজ হোল্ডারদের এক মাসের চাল বিনামূল্যে দেওয়া হবে৷ তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় তিন মাসের জন্য মাথাপিছু ৫ কেজি করে বিনামূল্যে চাল পাবেন৷ এবং এক কেজি করে ডাল পাবেন৷
শিক্ষামন্ত্রী জানান, উজ্জলা যোজনায় এডিসি এলাকারও ৬৮ হাজার ৪১০ জন তিন মাস একটি করে রান্নার গ্যাস সিলিণ্ডার বিনামূল্যে পাবেন৷ তাতে ব্যয় হবে ১৮ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা৷ পি এম কিষাণ যোজনায় ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়৷ এডিসি এলাকায় এই প্রকল্পের সুুবিধা পান ১ লক্ষ ৬ হাজার ১৭৫ জন৷ তাদের একাউন্টে প্রথম ইনস্টলমেন্ট ঢুকেছে৷ ব্যয় হয়েছে ২১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা৷ প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনায় ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ১৮৯ জন মহিলা এই প্রকল্পের সুুবিধা পাচ্ছেন৷ তাদের একাউন্টে ২৫ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ঢুকছে৷
তিনি জানান, রাজ্যের ইট ভাট্টাগুলিতে ২১ হাজার ৮৯৯ জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে৷ রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের প্রত্যেকের একাউন্টে বা নগদে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে৷ তাদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে৷ তাদের ড্রাই রেশন বা রান্না করা প্যাকেট খাবারও দেওয়া হবে৷