লকডাউন চলাকালীন সমস্ত বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মানতে হবে, নির্দেশ কেন্দ্রের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ এপ্রিল৷৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দিয়েছে, লকডাউন চলাকালীন সময়ে নির্দেশিত সমস্ত নিয়মনীতি সম্পূর্ণরূপে পালন করতে হবে৷ এতে আরও বলা হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর ৫১-৬০ ধারা এবং আইপিসি-র ১৮৮ ধারায় নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংসৃকতি দফতর এক প্রেস বিবৃতিতে এই খবর জানিয়েছে৷


বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর আওতায় যে সব কারণে শাস্তি হতে পারে তা হচ্ছে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনও কর্মচারী বা আধিকারিক বা কেন্দ্রীয় / রাজ্য কর্তৃপক্ষ নিয়োজিত ভারপ্রাপ্ত কোনও কর্মীকে এই আইনের আওতায় দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে বা কেন্দ্র / রাজ্য সরকারের নির্দেশ, এই আইনের আওতাধীন জাতীয় / রাজ্য কার্যকরী কমিটি বা জেলা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করলে নিয়ম / নির্দেশ অমান্যকারীর এক বছরের জেল বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে৷ তবে যদি এ রকম নির্দেশ না মানার ফলে কোনও প্রাণহানি ঘটে তা হলে প্রমাণ সাপেক্ষে দু’বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে৷


বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্র / রাজ্য সরকার, জাতীয়, রাজ্য বা জেলা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও প্রকার ত্রাণ, মেরামত ইত্যাদি সহায়তা লাভের জন্য স্বজ্ঞানে মিথ্যা দাবি করলে দু বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা হতে পারে, বিপর্যয় পরিস্থিতিতে ত্রাণের জন্য প্রদত্ত টাকা বা জিনিসপত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করলে বা অন্য কাউকে ব্যবহার করতে বাধ্য করলে প্রমাণ সাপেক্ষে দু-বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা হতে পারে৷ তাছাড়া বিপর্যয় সম্পর্কিত মিথ্যা প্রচার করলে, যা জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে প্রমাণিত হলে এক বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে৷ এই আইনের আওতায় যদি সরকারি দফতর কোনও অপরাধ করে থাকে তা হলে দফতরের কর্তাকে অপরাধী মেনে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির প্রক্রিয়া চলবে যদি না-তিনি প্রমাণ করেন যে, সংশ্লিষ্ট অপরাধ তাঁর অবগতির বাইরে ছিল বা তিনি সেই অপরাধ ঠেকাতে যথাসম্ভব প্রচেষ্টা করেছেন৷


এ রকম পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য দায়ী আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তাছাড়া যদি কোনও আধিকারিক এই আইনের আওতায় প্রাপ্ত দায়িত্ব উপযুক্ত কারণ ছাড়া বা কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া দায়িত্ব পালন না করে তা-হলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে যা নাকি এক বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা হতে পারে৷ যদি কোনও ব্যক্তি ৬৫ ধারার নির্দেশ মানতে রাজি না হন তা হলে তাঁর এক বছর পর্যন্ত জেল কিংবা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে৷
তেমনি কোনও কোম্পানি বা সংস্থা যদি কোনও অপরাধ করে তা হলে এই আইনে সেই সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে যদি না তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে সংশ্লিষ্ট অপরাধটি তাঁর অনুমোদন ছাড়া সংঘটিত হয়েছে বা তা প্রতিরোধে তিনি যথাসাধ্য উদ্যোগ নিয়েছেন৷ তবে সংশ্লিষ্ট অপরাধ যদি সেই কোম্পানির ম্যানেজার, ডিরেক্টর, সেক্রেটারি বা অন্য কোনও কর্মী সজ্ঞানে করে থাকেন তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ এই আইনের ৫৫ থেকে ৫৬ ধারায় প্রদেয় শাস্তি একমাত্র কেন্দ্র / রাজ্য সরকার বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আধিকারিক কোনও সাধারণ বা বিশেষ আদেশবলে জারি করবেন৷ এই আইনের জাতীয় কর্তৃপক্ষ বা রাজ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্র / রাজ্য সরকার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের অভিযোগ ছাড়া আদালত কোনও মামলা গ্রহণ করবে না৷ এই আইনে কোনও ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে জাতীয় / রাজ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্র / রাজ্য সরকারের কাছে করতে পারেন৷


পাশাপাশি ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় জারি করা বিধিনিষেধ চলাকালীন সময়ে কোনও ব্যক্তি যদি সজ্ঞানে সরকারি কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বা নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে তাঁর জরিমানা (২০০ টাকা পর্যন্ত) বা একমাস পর্যন্ত জেল কিংবা উভয় হতে পারে৷ তবে তাঁর কোনও ব্যবহার যদি মানুষের জীবনহানি, নিরাপত্তা সংশয় ঘটায় বা দাঙ্গা-হাঙ্গামার কারণ হয় তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা ছয় মাসের জেল কিংবা উভয় শাস্তি হতে পারে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *