নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ মার্চ৷৷ করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় মাস্ক পরার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই৷ ভাল করে বারবার হাত ধুলেই ওই ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ অভয় দিলেন ত্রিপুরার চিকিৎসক ডাঃ সুব্রত বৈদ্য৷সেই সঙ্গে বিষেশজ্ঞ মাইক্রো বায়োলজিস্ট ডাঃ তপন মজুমদার যোগ করেন, জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমনটা ভাববার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই৷ করোনা আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে গেলে তবেই ১৪ দিন নজরদারিতে থাকলেই বোঝা যাবে ওই ভাইরাসের সংক্রমিত কিনা৷ কোন ধরনের লক্ষণ ছাড়া অযথা পরীক্ষা করার কোন যৌক্তিকতা নেই৷
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ সুব্রত বৈদ্য এবং ডাঃ তপন মজুমদার৷ করোনা ভাইরাস নিয়ে কিছু ভুল ধারণা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাঁরা৷ ডাঃ সুব্রত বৈদ্য বলেন, ত্রিপুরায় এখনও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি৷ তবে, ভবিষ্যতে কাউকে পাওয়া যাবে না, বিষয়টি কোনভাবেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ তাঁর কথায়, আমরা নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছি না৷ অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ জেনেবুঝে ওই ভুল করছেন৷ তাঁর মতে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা নেই৷ কেবল, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের চিকিৎসা করছেন স্বাস্থ্য কর্মীদের মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ তাঁর দাবি, মাস্ক পরলেই কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন না, এই ভুল ধারণা নিয়ে থাকা উচিত হবে না৷ কারণ, অনেকেই মাস্ক ব্যবহারের প্রকৃত উপায় মানছেন না৷ ফলে, ওই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে৷ তাঁর পরামর্শ, ভাল করে হাত ধোয়ার অভ্যাস করা খুবই জরুরি৷ সেক্ষেত্রে স্যানিটাইজার দিয়েই হাত ধুতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই৷ সাবান দিয়ে হাত ধুলেই যথেষ্ট, বলেন তিনি৷ তাঁর সাফ কথা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবেই৷
এদিকে, ডাঃ তপন মজুমদার করোনা ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষার বিষয়ে মানুষের কিছু ভুলভ্রান্তি রয়েছে, তা দূর করার চেষ্টা করেছেন৷ তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে থাকলেই পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ তবে, ১৪ দিন নজরদারিতে থাকলেই সংক্রমিত কিনা তা স্পষ্ট হয়ে যায়৷
তাঁর কথায়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংস্পর্শে রয়েছে এমন ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই তবেই পরীক্ষা করুন৷ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য একমাত্র জিবি হাসপাতালে যোগাযোগ করা উচিত৷ কারণ, জি বি হাসপাতালে ফ্লু ক্লিনিকে ৩ চিকিৎসক থাকেন৷ তারা প্রাথমিক পরীক্ষা করে দেখে নেন কোন লক্ষণ রয়েছে কিনা৷ তবেই, পরীক্ষা করার জন্য পরামর্শ দেন তাঁরা৷ শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির পরামর্শ দেন তাঁরা৷ তিনি জানান, মুখের লালা দিয়ে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়৷ এক্ষেত্রে রিপোর্ট আসতে ছয় ঘন্টা সময়ের প্রয়োজন৷ তাঁর দাবি, জি বি হাসপাতালে ওই রোগের পরীক্ষা করার ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে৷ ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আরেকটি অত্যাধুনিক রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন কেনা হয়েছে৷ এখন একসাথে ৩০০ নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে৷
তিনি আরও জানান, ওই রোগের পরীক্ষায় কাউকে হয়রানি না হয়, তার জন্য প্রত্যেক জেলায় একজন করে মাইক্রো বায়োলজিস্ট এবং একজন করে পাবলিক হেলথ চিকিৎসক নিযুক্ত করা হয়েছে৷ নমুনা সংগ্রহে পর্যাপ্ত কীট দেওয়া হয়েছে৷ ফলে, এখন কাউকেই পরীক্ষার জন্য আগরতলায় ছুটে আসতে হবে না৷ মাইক্রো বায়োলজিস্টরা নমুনা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেবেন জি বি হাসপাতালে৷ সেই নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌছে যাবে৷