নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ ফেব্রুয়ারি৷৷ আজ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মলনে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, স্পিরিচুয়াল টুরিজমের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ মাতা ত্রিপুরেশ্বরী টেম্পল ট্রাস্টকে ১৪.২২ একর জমি দেওয়া হয়েছে৷ উদয়পুর মহকুমার ফুলকুমারী মৌজায় অবস্থিত এই জমি৷ সরকারি হিসাবে এই খাস জমির মূল্য ৪৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৪০০ টাকা৷ এর জন্য রাজ্য সরকারকে কোন মূল্য দিতে হবে না৷ স্পিরিচুয়াল ট্যরিজমকে উন্নত করার জন্য রাজ্য সরকার এই মূল্য ছাড় দিয়েছে ট্রাস্টকে৷ এই জমিতে ৫১ পিঠের রেপ্লিকা নির্মাণ করা হবে৷ এখানে ‘স্পিরিচুয়াল ট্যরিজম’ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যের যুববিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের উপধিকর্তা বিশ্বেশ্বর নন্দীকে ১ বছরের জন্য রি-এম্পয়মেন্ট দেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে৷ ক্রীড়াক্ষেত্রে শ্রী নন্দীর অসামান্য অবদান রয়েছে৷ রাজ্যের ক্রীড়াক্ষেত্রকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করেই এই রি-এম্পয়মেন্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান আগামী ২০ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন৷
প্রসঙ্গক্রমে সাংবাদিক সম্মেলনে এ বছরের ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ তাদের সফলতাও কামনা করেন তিনি৷ তিনি জানান, এবছরের উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসা ফাজিল পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ২ মার্চ থেকে৷ মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭,৮৪২ জন৷ এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে রয়েছেন ৩,১৯৮ জন৷ কলা বিভাগের পরীক্ষার্থী ২৩,২৪৫ এবং বাণিজ্য বিভাগের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৯৯ জন৷ মাদ্রাসা ফাজিলে ২৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন৷ মোট পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে ৬০টি, ভেন্যু রয়েছে ৮৬টি৷ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৩ মার্চ থেকে৷ একই সাথে শুরু হচ্ছে মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষাও৷ মাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থী রয়েছেন ৫০,৫৬৯ জন৷ মাদ্রাসা আলিমে ১০০ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে৷ রাজ্য সরকার একটি নতুন কর্মসূচি নিয়েছে ’বছর বাঁচাও’৷ অর্থাৎ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কোন পরীক্ষার্থী যে কোন দুটি বিষয়ে উত্তীর্ণ না হতে পারলেও ৭৫ দিন পরে আবার পরীক্ষায় বসার সুুযোগ পাবে৷ এক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে মোট নম্বর নূ্যনতম ১৫০ নম্বর পেতে হবে৷ আগে শুধুমাত্র ১টি বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলে এই সুুযোগ পেত ছাত্রছাত্রীরা৷ ২টি বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলে পরের বছর পরীক্ষা দিতে হত৷ তাছাড়াও অসুুস্থতা বা অন্য কোন কারণে ছাত্রছাত্রীরা ১টি বিষয়ের পরীক্ষা না দিতে পারলেও এই বছর বাঁচাও কর্মসূচির সুুযোগ পাবে৷ এক্ষেত্রে নূ্যনতম ১৫০ নম্বর পেলেই এই সুুযোগ পাওয়া যাবে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে কোন ছাত্রছাত্রী অসুুস্থ হলে নিকটবর্তী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ আগরতলার ক্ষেত্রে এমন হলে আই জি এম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী৷
মন্ত্রী শ্রীনাথ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশেষ কোন কর্মসূচি যেমন মিছিল ইত্যাদি অনুষ্ঠিত না করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অনুরোধ জানান৷ তিনি ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় কোন ধরণের ব্যাঘাত যেন না ঘটে সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সকল অংশের মানুষের কাছে আহ্বান জানান৷ পরীক্ষার সাথে যুক্ত বিভিন্ন দপ্তর সহ সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী৷
অপর একটি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা দপ্তরে ১২৯৬ জন গ্রেজয়েট টিচার এবং ১৩২ জন পোষ্ট গ্রেজয়েট টিচার নিয়োগ করা হয়েছে৷ তিনি জানান, বুনিয়াদী শিক্ষা দপ্তরে শীঘই জিটিতে ১৭২ জন এবং ইউজিটিতে ৫৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকায় নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে৷ এই শিক্ষকদের মধ্যে জিটি ও ইউজিটি মিলে ধলাই জেলায় ৫৭ জন উত্তর জেলায় ৩০ জন, সিপাহীজলায় ১৮ জন, দক্ষিণ ত্রিপুরায় ৩৮ জন, গোমতী জেলায় ২৫ জন, ঊনকোটি জেলায় ৪৯ জন, খোয়াই জেলায় ৩ জন এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ৩ জনকে পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ এছাড়াও এম জি এন রেগা কাজের প্রসঙ্গ টেনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০১৭-১৮ সালে জবকার্ড পিছু গড়ে কাজ দেওয়া হয়েছিল ৩৩.৬৮ শ্রমদিবস৷ বরাদ্দ ছিল ৪৭৭ কোটি ১১ লক্ষ টাকা৷ ২০১৮-১৯ গড় শ্রমদিবস ৪৬ দিন, বরাদ্দ ছিল ৫৩৬ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা৷ ২০১৯-২০ বছরের ১৫ ফেবয়ারি পর্যন্ত গড়ে জবকার্ড পিছু কাজ দেওয়া গেছে ৫৩.১০ দিনের৷ ১৫ ফেবয়ারি পর্যন্ত আর্থিক বরাদ্দ ৬৭৬ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷