বন্ধ গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রায়২৪ কোটি টাকার চন্দন কাঠ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ ফেব্রুয়ারি৷৷ বন্ধ গুদামে হানা দিয়ে ৮,০০০ কেজি চন্দন কাঠ উদ্ধার হয়েছে৷ এগুলোর বাজারমূল্য ১০ থেকে ২৪ কোটি টাকা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ মঙ্গলবার অরুন্ধুতিনগর বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিএসএফ, ত্রিপুরা পুলিশ, বন দফতর এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে চন্দন কাঠগুলি উদ্ধার হয়েছে৷


ওই অভিযান সম্পর্কে পশ্চিম জেলা বন আধিকারিক শক্তিকান্ত সিং জানান, পশ্চিম জেলার অধীন অরুন্ধুতিনগর বাণিজ্য ক্ষেত্রে ধরমপাল সত্যপাল গ্রুপের বন্ধ গুদামের একটি ঘরে প্রচুর চন্দন কাঠ উদ্ধার হয়েছে৷ মোট ১৬০টি ব্যাগে ভরতি ছিল চন্দন কাঠগুলি৷ তিনি জানান, ৮০০০ কেজি চন্দন কাঠের বাজারমূল্য ১০ কোটি টাকা হবে৷ তবে, চন্দন কাঠ বিভিন্ন গুণমানের হয়৷ উৎকৃষ্ট গুণমানের চন্দন কাঠ হলে তার সবর্োচ্চ বাজারমূল্য হতে পারে ২৪ কোটি টাকা৷ তাঁর কথায়, ওই কাঠ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে৷ তার পরই তার প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে অবগত হওয়া সম্ভব৷
তিনি বলেন, ওই গুদামের মালিককে পাওয়া যায়নি৷ তাছাড়া, গুদামঘরের চাবিও কারোর কাছে ছিল না৷ ফলে, তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে হয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, ওই গুদাম পাহারায় চারজন বেসরকারি রক্ষী রয়েছেন৷ রয়েছে একজন ম্যানেজারও৷ তাদের কারোর কাছেই গুদামের চাবি ছিল না৷ তাঁর কথায়, খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওই গুদামে আসা-যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে৷ এর পর থেকে কেউ এখানে এসেছেন এমন কোনও রেকর্ড আপাতত পাওয়া যায়নি৷


বন আধিকারিক শক্তিকান্ত সিং বলেন, ওই গুদামের মালিককে তলব করা হবে৷ তাঁর দাবি, উদ্ধারকৃত চন্দন কাঠ ক্রয়ের আইনি কোনও কাগজও পাওয়া যায়নি৷ তাছাড়া, ওই কাঠের এখনও কোনও দাবিদার নেই৷ ফলে, আপাতদৃষ্টিতে ওই কাঠ বেআইনি বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তবে, তদন্ত সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত এ-বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও ঘোষণা করা সম্ভব নয়, বলেন তিনি৷ শক্তিকান্ত জানান, বনাধিকার আইনে সমস্ত চন্দন কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ যদি ওই কাঠ পাচারের সাথে কাউকে যুক্ত পাওয়া যায় তা-হলে তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা হবে৷ তাঁর ধারণা, ৫-৭ বছর ধরে ওই গুদামে চন্দন কাঠ জমা করা হচ্ছে৷ ওই কাঠ কর্ণাটক থেকে এনে এখানকার গুদামে মজুত করা হয়েছে বলেও তিনি অনুমান করছেন৷
বিএসএফ-এর ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এ কে যাদব বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ, বন দফতর এবং সাধারণ প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমরা চন্দন কাঠ উদ্ধার অভিযানে নেমেছিলাম৷ এতে বিরাট সাফল্য মিলেছে৷ তাঁর কথায়, তালা ভেঙে গুদামে ঢুকে একটি ঘর থেকে বস্তাবন্দি চন্দন কাঠ উদ্ধার হয়েছে৷ এখন ওই কাঠ ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে৷


প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় পাচারবাণিজ্য সাংঘাতিকভাবে বেড়েছে৷ অবশ্য আগের তুলনায় ধরপাকড়ও বেড়েছে৷ কিন্তু আগরতলায় বিশাল মাত্রায় চন্দন কাঠ উদ্ধারের ঘটনাকে কোনওভাবেই খাটো করে দেখা যাচ্ছে না৷ তাতে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও পাচারকারীরা তাদের গতিবিধি আরও জোরদার করেছে৷ সেক্ষেত্রে পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে আরও সতর্ক হতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *