নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ ফেব্রুয়ারী৷৷ সম্ভবত কপাল খুলতে চলেছে চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের৷ কারণ, রাজ্য সরকার ১১৮০০ শূণ্যপদ তৈরি করতে চলেছে৷ মূলত, বিভিন্ন শূন্যপদে চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদেরই পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ অবশ্য, বেকারদের সামনেও কর্মসংস্থানের সুযোগ আসছে বলেও মনে করা হচ্ছে৷
সূত্রের খবর, প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের অধীনে মিড ডে মিল সহায়ক পদে ৬০০০ শূণ্যপদ তৈরি করা হবে৷ এছাড়া হোস্টেল ওয়ার্ডেন ৩০০ এবং ১০০০ হাজার মিড ডে মিল সুপারভাইজার অথবা কর্ডিনেটর পদে শূণ্য তৈরি করা হবে৷ সূত্রের আরও দাবি, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ৪০০০ আর্লি চাইল্ডহুড অর্গানাইজার পদ সৃষ্টি করা হবে৷
ধারনা করা হচ্ছে, চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের ওই অশিক্ষক পদে পুনর্বাসন দেওয়া হতে পারে৷ কারণ, আগামী ৩১ মার্চ এডহক ভিত্তিতে নিযুক্ত চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের চাকুরির মেয়াদ সমাপ্ত হয়ে সমাপ্ত হয়ে যাবে৷ স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার বামেদের পথেই হাটতে চলেছে৷ ইতিমধ্যে, ১০৩২৩ চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের অনেকেই শিক্ষকতার স্থায়ী চাকুরী পেয়েছেন৷ কারণ, শিক্ষনীতি ২০০৯ মেনে তারা টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন৷ তাই, প্রায় ৮০০০ চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের এডহক ভিত্তিতে আগামী ৩১মে চাকুরির মেয়াদ সমাপ্ত হচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, বাম জমানায় ত্রিপুরা হাইকোর্টের রায়ে শিক্ষকদের চাকুরী বাতিল হয়েছিল৷ তারপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও বামফ্রন্ট সরকার ওই চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের চাকুরী বাঁচাতে পারেনি৷ ফলে, ২০১৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার ওই চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের পূনর্বাসনে ১৩০০০ অশিক্ষক পদ তৈরী করেছিল৷ তার মধ্যে শিক্ষা দপ্তরে ১২০০ হাজার এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরে ১০০০ শূণ্যপদ সৃষ্টি করেছিল বামফ্রন্ট সরকার৷ তাতে একাডেমিক কাউন্সিল হিসেবে ১২০০, স্টুডেন্ট কাউন্সিলর হিসেবে ৩৪০০, লাইব্রেরি এসিস্টেন্ট পদে ১৫০০, হোস্টেল ওয়ার্ডেন পদে ৩০০ এবং প্রোগ্রাম এসিস্টেন্ট পদে ৫৬০০ শূণ্যপদ তৈরী করা হয়েছিল৷ বর্তমান বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ ওই সময় বিধানসভায় তদানিন্তন রাজ্য সরকারের ওই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধীতা করেছিলেন৷ শুধু তাই নয়, অশিক্ষক পদ সৃষ্টি নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলাও হয়েছিল৷ রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর ওই মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শূণ্য পদের নিয়োগ পক্রিয়া শুরু না হওয়ায় নিয়মানুযায়ী ১৩০০০ অশিক্ষক পদ বাতিল হয়ে যায়৷ ফলে, চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের পূণর্বাসনের কোনও পথ খোলা ছিল না৷
কিন্তু, ওই চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে তা ইতিমধ্যেই আঁচ করতে পেড়েছে রাজ্য সরকার৷ সম্ভবত, আগামী ৩১ মার্চের পর রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার তাগিদই ওই শূণ্যপদ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ কারণ, চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা ইতিপূর্বে বিভিন্ন সভায় আক্ষেপ করে বলেছেন, ৪০ জনের উপর এডহক শিক্ষক দুশ্চিন্তায় প্রাণ হারিয়েছেন৷