BRAKING NEWS

ক্ষতিপূরণ ইস্যুতে ৫ ফেব্রুয়ারি বৈঠক আহ্বান ডিমা হাসাও প্রশাসনের, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১৭ই থেকে রেল অবরোধ নিশ্চিত’

হাফলং (অসম), ৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : এনসি হিলস ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেলপথ অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর এবার নড়েচড়ে বসেছে ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন। আন্দোলনকারীদের দাবি ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১ টায় বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন ডিমা হাসাওযের জেলাশাসক অমিতাভ রাজখোয়া। ৫ তারিখের প্রস্তাবিত বৈঠক জেলাশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ডিমা হাসাওয়ের পুলিশ সুপার বীরবিক্রম গগৈ, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ, আন্দোলনকারী সংগঠনগুলি যথাক্রমে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম, ইন্ডিজেনাস পিপলস ফোরাম ও ইন্ডিজেনাস উইমেনস ফোরামকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জেলাশাসক অমিতাভ রাজখোয়া।

এদিকে জেলা প্রশাসন আহূত বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরামের সভাপতি ডেভিড কেভম বলেন, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে না দিলে ১৭ তারিখ থেকে পাহাড় লাইনে রেল অবরোধ করা হবেই। এর আগেও অনেকবার জেলাশাসকের কার্যালয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এত সবে কোনও কাজ হয়নি। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আজ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। তাঁর বক্তব্য, ২০১৯ সালের ৭ মার্চ পাহাড় লাইনে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ গড়ে তোলার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল আমাদের আলোচনার জন্য ১১ মার্চ বৈঠকে ডেকেছিলেন। সে অনুযায়ী আমরা ৯ মার্চ রেল অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। ডেভিড বলেন, ১১ মার্চের ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর কথায় আমল দেয়নি। আজ অবধি এই ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। তাই এবার আর বৈঠকে বা আলোচনা, এমন-কি প্রতিশ্রুতিতে চিড়ে ভিজবে না।

ডেভিড কেভম বলেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের মিটিয়ে না দিলে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৫-টা থেকে পাহাড় লাইনে অনির্দিষ্টকালের রেল অবরোধ গড়ে তোলা হবে, কোনও অবস্থায় তা প্রত্যাহার করা হবে না। কারণ গত ১০ বছর থেকে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ ইস্যু নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। তাই এবার বৈঠক আলোচনা আর প্রতিশ্রুতিতে রেল অবরোধ প্রত্যাহার কোনও অবস্থায় করা হবে না বলে স্পষ্ট জানান ডেভিড কেভম।

উল্লেখ্য, লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে নিউ-হাফলং থেকে নিউ-হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত প্রায় ৫০টি গ্রামের কয়েকশো গ্রামবাসীর জুম ক্ষেতের জমি থেকে শুরু করে বাড়িঘর নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে গ্রামবাসীরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসলেও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ গ্রামবাসী এবং আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *