ধর্মনগরে পৃথক জায়গায় প্রচুর নেশা সামগ্রী উদ্ধার, শিক্ষক সহ গ্রেপ্তার চার

নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ২২ ডিসেম্বর৷৷ রবিবার ধর্মনগরের একাধিক স্থানে উত্তর ত্রিপুরা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হলো ব্যাপক নেশা সামগ্রী৷ প্রথমে রবিবার সকালে বাংমুং সুকলের সম্মুখ থেকে নেশাজাতীয় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক শিক্ষককে আটক করার পর পুনরায় রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মনগর রাজবাড়ী দুর্গাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন নেশা কারবারি সহ পঞ্চাশ কিলো গাঁজা উদ্ধার করল ধর্মনগর পুলিশ৷ সন্ধ্যায় তিন নেশা কারবারীকে আটক করতে উত্তর জেলার পুলিশ সুপারের সাথে ছিলেন ধর্মনগর মহাকুমার পুলিশ আধিকারিক রাজিব সুত্রধর৷ শামসুর রহমান, মাহিদুল ইসলাম ও সোহেল ভূঁইয়া নামক এই নেশা কারবারিকে আটক করে পুলিশ ভানুপদ চক্রবর্তী জানান৷
শিক্ষক সমাজের মেরুদণ্ড৷ শিক্ষকরা ভবিষ্যৎ কারিগর গড়ার অন্যতম অংশ৷ সে কারণেই শিক্ষকরা সর্বজন শ্রদ্ধেয়৷ কিন্তু একাংশ শিক্ষকের বদান্যতায় গোটা শিক্ষক সমাজ ব্যবস্থা কলঙ্কিত হচ্ছে৷ এধরনের এক শিক্ষককে রবিবার দুপুর নাগাদ নেশা সামগ্রী ইয়াবা সহ ট্যাবলেট সহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ ওই কলঙ্কিত শিক্ষকের নাম সৌমেন আচার্য্য৷


উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগর দেওছড়া সুকলের শিক্ষক সৌমেন আচার্য্য দীর্ঘদিন ধরেই নেশা পাচার বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ৷ বিষয়টি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের নজরেও আসে৷ পুলিশ বেশ কিছুদিন ধরেই তার দিকে নজর রেখে চলেছিল৷ রবিবার গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় কে বং রাং হসপিটালের সামনে থেকে ৮ হাজার ইয়াবা সহ ওই কলঙ্কিত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ বাইকে করে ওই নেশা জাতীয় ট্যাবলেট নিয়ে যাচ্ছিল ওই কলঙ্কিত শিক্ষক সৌমেন আচার্য্য৷ সুনির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে পুলিশ হাসপাতালের সামনে থেকে বাইক সহ তাকে আটক করে৷ বাইকে তল্লাশি চালিয়ে তার হেফাজত থেকে ৮ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়৷ সমাজের কলঙ্ক ও শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক৷ শিক্ষক নামধারী সৌমেন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে এনডিপিএস ধারায় মামলা গৃহিত হয়েছে৷ তার বাড়ি পশ্চিম রাধাপুর এলাকায়৷ উত্তর জেলার জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷


নেশা সামগ্রী সহ শিক্ষককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ সমাজ গঠনের মূল কারিগর শিক্ষকরাই যদি এধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে তাহলে সমাজ ব্যবস্থা কোন পথে ধাবিত হবে সেই প্রশ্ণও দেখা দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, এধরনের ছোট অংশের জন্য গোটা শিক্ষক সমাজ কলঙ্কিত হচ্ছেন৷ তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে দাবি উঠেছে৷


ধর্মনগর রাজবাড়ী দূর্গাপুর এলাকার স্থানীয় জনগনের অভিযোগের ভিত্তিতেই রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী দূর্গাপুর এলাকার সামিম মিয়ার বাড়িতে হানা দেয়৷ পুলিশের আচপেয়ে কুখ্যাত নেশাকারবারি সামিম মিয়া পালিয়ে যায়৷ পরবর্তীতে পুলিশের কাছে খবর আসে সামিম মিয়ার শশুর বাড়িতে ব্যাপক গাঁজা মজুদ রয়েছে৷ সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সামিম মিয়ার শশুর বাড়িতে অভিযান চালায়৷ এবং সেখান থেকে দশ কিলো ওজনের পাঁচ প্যাকেট গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ৷ সঙ্গে আটক করে এই তিন কারবারিকে৷ পুলিশ সুপার আরো জানান গাড়ি চালক মাহিদুল ইসলাম ও সোহেল ভূঁইয়ার বাড়ি আসামের বঙ্গাইগাঁও-এ৷ তারা আজ এই গাঁজা গুলো আগরতলা থেকে ধর্মনগরে নিয়ে এসেছিল৷ এবং টেঙ্কি গাড়ি চালক শামসুর রহমান আজ রাতেই গাঁজা গুলো নিয়ে শিলচর পারি দেওয়ার কথা ছিলো৷পুলিশ ইতি মধ্যে এনডিপিএস এক্টে মামলা নিয়ে তদন্তে নেমেছে৷ তাদের নেশার কারবারের সাথে আরো কারা জড়িত রয়েছে এ বিষয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে৷আগামীকাল তাদের আদালতে তোলা হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *