নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যে শান্তি ফেরাতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন সিপিআইএমের৷ দলের পক্ষ থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংসদে পাশ করানো নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোটের বন্ধে, অবরোধের ফলে রাজ্যের কয়েকটি মহকুমায় যেসব হিংসাত্মক ঘটনা সংগঠিত হয় এবং কোথাও কোথাও জাতি-গোষ্ঠীগত উত্তেজনা ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়৷ সেসব এলাকায় দ্রুত শান্তি, সম্প্রীতির পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এ মুহুর্তেরগ সবচেয়ে জরুরি কাজ৷
সিপিআএম, ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি এবং রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার, ত্রিপুরা রাজ্য উপজাতি গণমুক্তি পরিষদ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বা সাংবাদিক সম্মেলন করে শান্তি সম্প্রীতি রক্ষা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে রাজ্যবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি, এলক্ষ্যে রাজ্য সরকারকে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়ার জন্য জানানো হয়৷ শান্তি সম্প্রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনজীবন সচল করায় রাজ্য সরকার এবং শাসন জোটেরই প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য৷
কিন্তু এটা দেখা যাচ্ছে সরকারের যতটা গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা প্রয়োজন সে উদ্যোগ সর্বত্র নেই৷ শাসন জোটের দু’শরিক দল বিজেপি এবং আইপিএফটির নেতৃত্বের ইতিবাচক৷ কাঞ্চনপুর, লংতরাইভ্যালি, আমবাসা, কমলপুর, গণ্ডাছড়া, অমরপুরের কোথাও কোথাও দু শরিক দলের নেতৃত্বের এ ধরণের আচরণ দেখা যাচ্ছে৷ কোথাও কোথাও বিজেপি’র কোন কোনও নেতা প্ররোচনামূলক বক্তব্য রাখছেন যা শান্তি প্রতিষ্ঠার সহায়ক নয়৷ কোনও কোনও মহকুমায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ নানা সুরক্ষা মঞ্চে শামিল হয়ে উত্তেজনা জিইয়ে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন৷ সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী দাবি জানিয়েছে অবিলম্বে রাজ্যস্তরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সর্বদলীয় সভা ডেকে সর্বত্র শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে আবেদন জানানো হোক৷
মহকুমা ও ব্লক স্তরে প্রসাসনের উদ্যোগে অনুরূপ সর্বদলীয় সভা আহ্বান করা হোক৷ যারা হিংসাত্মক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সরকার থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হোক৷ যারা বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তাদের স্ব স্ব এলাকায় ফিরে যাবার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা হোক৷ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মন থেকে সন্দেহ অবিশ্বাস দূর করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হোক৷ হিংসাত্মক আক্রমণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হোক৷
রাজ্যের সমস্ত অংশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন জনগণকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে এবং উস্কানি ও প্ররোচনাদাতাদের কোণঠাসা করে শান্তি বিঘ্নের যেকোনও অপচেষ্টা ব্যর্থ করতে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী আহ্বান জানিয়েছেন৷