নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ নভেম্বর৷৷ বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্যের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে৷ রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আগামীদিনে রাজ্যের রাজস্ব আয় আরও কিভাবে বৃদ্ধি করা যেতে পারে সে বিষয়ে রাজস্ব দপ্তরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে৷ আজ সচিবালয়ের ১ নং কনফারেন্স হলে রাজস্ব দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এ কথা বলেন৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/788787-1024x682.jpg)
সভায় তিনি আরও বলেন, বনাধিকার আইনে প্রাপ্ত জমির চিহ্ণিতকরণের কাজ দ্রত সম্পন্ন করতে হবে৷ পাশাপাশি পা-াপ্রাপ্ত জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জনজাতিদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুুযোগ পা-াপ্রাপ্ত জমির মালিকদের প্রদান করার জন্য রাজস্ব দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সে লক্ষ্যে ক’ষি, প্রাণীসম্পদ বিকাশ, উদ্যান, মৎস্য, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের যেসব প্রকল্প রয়েছে সেগুলির মাধ্যমে পাট্টাাপ্রাপ্ত জমির মালিকদের উৎসাহিত করতে হবে৷
সভায় রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব বি কে সাহু বলেন, রাজস্ব দপ্তর মূলত: ভূমি সংস্কার, ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, ত্রাণ, পুনর্বাসন, প্রাক’তিক বিপর্যয় মোকাবিলা, রাজস্ব সংগ্রহ, পা-া প্রদান, দেবার্চনা ইত্যাদি কাজগুলি করে থাকে৷ তিনি বলেন, জমির ক্রয়-বিক্রয় করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ই-স্ট্যাম্পিং ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় ই-স্ট্যাম্পিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে৷ বর্তমানে প্রতিটি মহকুমায় স্টেট কো-অপরেটিভ ব্যাঙ্ক এবং ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ই-স্ট্যাম্প বিক্রি করছে৷ সেইল ডিড, পার্টিশন ডিড, লীজ ডিড, মর্টগেজ ডিড, উইল ডিড, পার্টনারশিপ ডিড, এগ্রিমেন্ট ডিড ব্যবস্থাকে উন্নত করা হয়েছে৷ তিনি আরও জানান, ত্রিপুরা ল্যাণ্ড রেভেনিউ ও ল্যাণ্ড রিফর্মস অ্যাক্ট সংশোধনের জন্য রাজস্বমন্ত্রীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ জমির মানচিত্রকে আপডেটিং করার জন্য জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকদের বলা হয়েছে৷ জমির মানচিত্রকে আপডেটিং করার প্রক্রিয়াকে দ্রত সম্পন্ন করার জন্য জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকদের নির্দিষ্ট সময়সীমা স্থির করে দেওয়ার জন্য সভায় উপস্থিত মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলুকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, রাজ্যের ২২২টি তহশীলের তহশীলদারদের কর্মদক্ষতা ব’দ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রতিটি তহশিলের যেখানে কম্পিউটার নেই সেখানে কম্পিউটার প্রদান করার জন্য রাজস্ব দপ্তরকে উদ্যোগ নিতে হবে৷
সভায় প্রধান সচিব বি কে সাহু আরও জানান, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, পি এস ইউ ইত্যাদির অব্যবহৃত জমিগুলি চিহ্ণিত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের অধীনে কি পরিমাণ জমি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে সেগুলি চিহ্ণিত করতে হবে৷ যদি দেখা যায় সরকারী অব্যবহৃত জমিগুলি অবৈধভাবে কারোর দখলে আছে তাহলে তা পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে৷ প্রধান সচিব জানান, সিপাহীজলা এবং খোয়াই জেলার প্রশাসনিক বিল্ডিং নির্মাণের জন্য এন এল সি পি আর প্রকল্পে মোট ৪১ কোটি ১২ লক্ষ টাকার ম’রী পাওয়া গেছে৷ ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ এছাড়াও জম্পইজলা, অমরপুর, খোয়াই, করবুক এবং পানিসাগর মহকুমার মহকুমা শাসকের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে৷ কাজগুলি সময়ের মধ্যে এবং গুণগতমান বজায় রেখে সম্পন্ন করার উপর সভায় গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সভায় এছাড়াও প্রাক’তিক বিপর্যয় মোকাবিলায় দপ্তরের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব বি কে সাহু৷ পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা, মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলু, আইন সচিব গৌতম দেবনাথ, উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব এন. ডার্লং এবং রাজস্ব দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷