নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ নভেম্বর৷৷ ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর চিকিৎসা ক্ষেত্রে রাজ্যের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে৷ যার ফলে চিকিৎসার জন্য বহিঃরাজ্যে যাবার প্রবণতা দ্রুত কমেছে৷ মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের মত জটিল রোগের চিকিৎসাও হচ্ছে রাজ্যে৷ যা কখনও চিন্তাই করা যেত না৷ আজ মঙ্গলবার এভাবেই স্বাস্থ্য পরিষেবার চিত্র তুলে ধরলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরা সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ফলে এই সময়ের মধ্যে সাফল্যও এসেছে৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/74664524_2115201821914815_1791880108445794304_o.jpg)
তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ১৫৯টি নিউরো অপারেশন হয়েছে রাজ্যে৷ কমপক্ষে ৮ লক্ষ টাকার অপারেশন হচ্ছে মাত্র ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায়৷ তিনি বলেন, নিউরো সার্জারি করার ব্যবস্থা না থাকার কারণে এতদিন রোগীদের বহিঃরাজ্যে যেতে হত৷ এই প্রবণতা বন্ধ করার জন্য বেশি টাকা দিয়ে রাজ্যে আনা হয়েছে নিউরো সার্জন৷ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নতুন সরকারের এই উদ্যোগের ফলে এই সময়ের মধ্যে ১৫৯টি অস্ত্রোপচার হয়েছে৷ এর মধ্যে ১৫০টি-ই মস্তিষ্ক সংক্রান্ত জটিলতার৷ এতে রাজ্যবাসীর কমপক্ষে ১২ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়নি৷
এদিন ভারতীয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য বিমা যোজনা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে প্রতি বছর যোগ্য ব্যক্তিরা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারবেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে ২০ লক্ষ ৫৬ হাজার আয়ুষ্মান কার্ড করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ৮৪ হাজার পরিবারের ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এ সংক্রান্ত সমীক্ষা থেকে৷ তাদের জন্য রাজ্যের নতুন সরকার আয়ুষ্মান ত্রিপুরা নামে একটি নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করেছে৷ সব মিলিয়ে ২৪ লক্ষ ১৩ হাজার কার্ড হবে৷ দলমত নির্বিশেষে সকল যোগ্য লোকই এর সুযোগ পাবেন৷ ইতিমধ্যেই ৬ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষের আয়ুষ্মান ভারত কার্ড হয়ে গেছে৷ তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এপ্রিল মাসের মধ্যেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব আরও বলেন, সিমনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন৷ প্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন, মাত্র ৫০০ মিটার রাস্তা এবং একটি কালভার্ট তৈরি করলেই বাংলাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব৷ এই সম্ভাবনার বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান৷ পাশাপাশি সেখানে সীমান্তহাট করার উদ্যোগও থাকবে বলে উল্লেখ করেন৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় লক্ষ্মীলুঙ্গা, লেম্বুছড়া ও গান্ধীগ্রামের সমন্বয়স্থল রাজারবাঁধ এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উন্নীত করার জন্য রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে৷ স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান৷ এদিন চা বাগানকে কেন্দ্র করে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি স্থানীয় চা উৎপাদকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে চা পাতা ক্রয় করার জন্য৷ তা ওই এলাকার অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্ব রাখবে৷