নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ নভেম্বর৷৷ ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ প্রত্যেকটা ছেলে মেয়েকে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় নিয়ে এসে গুণগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য রাজ্য সরকার নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু একাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকার আচরণে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্রমশ বিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে৷ যার জলন্ত উদাহরণ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর প্রগতি বিদ্যাভবনের প্রাত বিভাগে ঘটে যাওয়া ন্যাক্কার জনক ঘটনা৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/07/crime-scene-tape-1024x576.jpg)
এইদিন বিদ্যালয়ের প্রাত বিভাগের গুণধর শিক্ষক রথিন্দ্র চৌধুরীর বেধড়ক প্রহারে দুই ছাত্রীকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়৷ অনেকদিন আগে থেকে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর মারধর করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়৷ চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী, স্বাভাবিক ভবেই তারা শিশু৷ শিশু শিশু সুলভ আচরণ করবে এটাই স্বাভাবিক৷ এইদিন বিদ্যালয়ের প্রাত বিভাগের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীরা শ্রেণী কক্ষের অভ্যন্তরে নিজেদের মধ্যে খেলাধুলায় ব্যস্ত৷ খেলার ছলে তারা শ্রেণীকক্ষের মধ্যে জল ফেলে দেয়৷
আর তার জন্য শিক্ষক রথিন্দ্র চৌধুরী খেপে লাল হয়ে যান৷ উন্মত্ত হয়ে একটি লাঠি দিয়ে এই ছোট ছোট ছাত্রীদের বেধড়ক ভাবে মারধর করেন৷ বিশেষ করে চার ছাত্রীকে বেধড়ক ভাবে মারধর করা হয়৷ তার মধ্যে দুই ছাত্রির শরীরে দাগ পড়ে যায়৷ গুরুতর ভাবে আহত ছাত্রীরা বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে ফিরে যায়৷ তখন শরীরে দাগ পড়ে যাওয়া দুই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে কান্না করছি৷ অভিভাবকরা এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে৷ তখন তারা কান্না করতে করতে মা-বাবকে ঘটনার কথা খুলে বলে৷ তখন অভিভাবকরা প্রথমে নিজেদের মেয়েকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় হাসপাতালে৷
হাসপাতালে চিকিৎসার পর অভিভাবকরা রামনগর ফাঁড়ি থানায় গিয়ে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে গুণধর শিক্ষক রথিন্দ্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়৷ এমনটা জানান আহত ছাত্রীদের অভিভাবক৷
পাশাপাশি তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান৷এইদিকে থানায় অভিযোগ জানানোর পর বিদ্যালয়ে ছুটে আসে পুলিশ৷ ততক্ষণে বিদ্যালয়ের দুপুরের বিভাগের প্রধান শিক্ষকও বিদ্যালয়ে এসে উপস্থিত হন৷ পুলিশ কর্মীরা ঘটনার বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে অবগত করেন৷ তখন প্রধান শিক্ষক প্রাত বিভাগের গুণধর শিক্ষক রথিন্দ্র চৌধুরীকে বাড়ি থেকে ডেকে আনেন৷ এবং ঘটনার বিষয়ে জানতে চান৷ অভিযুক্ত শিক্ষকও ছাত্রীদের মারধরের কথা প্রধান শিক্ষকের নিকট স্বীকার করেন৷
তিনি জানান প্রাথমিক ভাবে আহত ছাত্রীদের চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করবে বিদ্যালয়৷ পরে কথা বলা হবে আহত ছাত্রীদের অভিভাবক ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে৷ তবে এখনই তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের রাস্তায় যেতে নারাজ৷ তিনি জানান প্রাথমিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের পর অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করা হবে৷বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের বেধড়ক ভাবে মারধরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ দাবি উঠেছে অভিযুক্ত গুণধর শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের৷