নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ২ নভেম্বর৷৷ থানার লক আপে প্রচন্ড মারধরের জেরে চুরির অভিযোগে ধৃত যুবকের হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি উঠেছে৷ মৃত যুবক মঙ্গল দাসের মা আরতি দাস আজ গোমতী জেলা শাসক ও উদয়পুর মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হন৷ ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি, ছেলের অবর্তমানে পরিবার প্রতিপালনে সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন৷ ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সিপিএম, কংগ্রেস এবং সিপিআইএমএল সোচ্চার হয়েছে৷ তারাও ওই মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2016/10/Tripura-Police.jpg)
প্রসঙ্গত, গত ২৩ শে অক্টোবর উদয়পুর ধবজনগরে একটি চুরির ঘটনার অভিযোগে এলাকাবাসী উক্ত মঙ্গল দাসকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়৷ ২৪ শে অক্টোবর আদালত থেকে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডে তাকে আনা হয়৷ পুলিশি হেপাজতে থাকা অবস্থায় উক্ত মঙ্গল দাসের রহস্যজনক মৃত্যু হয়৷ থানার লক আপে তাকে প্রচন্ড মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ কারণ মৃতের মা-র বক্তব্য, তার ছেলেকে যখন পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল তখন তিনি সুস্থ ছিলেন৷ কিন্তু, ৩১ অক্টোবর হাসপাতালে ডেকে নিয়ে তার ছেলের মৃতদেহ তুলে দেয়৷ মৃতের মা-র অভিযোগ, তার ছেলের মৃতদেহ ময়না তদন্ত শেষেই তড়িঘড়ি শেষকৃত্য সম্পন্ন করে ফেলে পুলিশ৷ শুধু মৃতদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এমন একটি কাগজে তার স্বাক্ষর রাখে পুলিশ৷
ছেলের মৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক দাবি করে আরতি দাস ওই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন৷ এদিকে, গোমতী জেলা কংগ্রেসও আজ ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের মা-র দাবির প্রতি সহমত জানিয়েছে৷ পুলিশের হেপাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গোমতী জেলা কংগ্রেস৷ এদিকে, ওই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সিপিএম৷ দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ওই ঘটনায় দোষী পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷
এদিকে, সিপিআইএমএল-র দাবি, ওই মৃত্যুর ঘটনায় ভারতীয় দন্ডবিধির ১৭৬নং ধারা অনুসারে বিচারবিভাগীয় তদন্তের বিধান রয়েছে৷ তবে এখানে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা তদন্ত কার্য কোনোভাবেই নিরপেক্ষ হতে পারে না৷ তাই এই জেলায় কর্মরত একজন বিচারপতি নিযুক্ত করে নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্ত করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানায় সিপিআই(এম-এল) ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি৷ দলের বক্তব্য, মঙ্গল দাস পিতৃহারা এক অত্যন্ত গরিব পরিবারের সন্তান৷
পেশায় সে ও তার মা নির্মাণ শ্রমিক৷ তাই, পুলিশি হেপাজতে মৃত্যুর কারণে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ লক্ষ টাকা তার অভাগা মায়ের হাতে তুলে দেয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে দল৷ তাছাড়া বিচার বিভাগীয় তদন্তের শুরুতেই আর কে পুর থানায় কর্তব্যরত তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করা হোক দাবি তাঁদের ৷