নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ অক্টোবর৷৷ সরকারি চাকুরীতে পদোন্নতিতে সংরক্ষণ মামলা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে গেলো৷ ২০১৫ সাল থেকে ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন পদে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে৷ মাঝে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার শর্তসাপেক্ষে পদোন্নতি প্রক্রিয়া চালিয়ে গেলেও তা নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করার পর সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করায় ত্রিপুরা সরকার সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল৷ সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ইতিমধ্যে পদোন্নতিতে সংরক্ষণ মামলা নিয়ে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের দায়েরকৃত মামলাকে একত্রিত করে একটি রায় দিয়েছে৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2016/10/Supreme-Court.jpg)
মূলতঃ সুপ্রিম কোর্টের বিবেচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল সংরক্ষণ ইস্যুতে নাগরাজ মামলার রায়ের সংশোধন প্রয়োজন রয়েছে কি না৷ তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর সুপ্রিম কোর্ট সংরক্ষণ ইস্যুতে একটি সাধারণ ফর্মুলা চূড়ান্ত করে দেয়৷ রায়ের ওই ফর্মুলাটি ছিল দপ্তর ভিত্তিক বিভিন্ন পদে এসটি, এসসিদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব রয়েছে কি না তা যাচাই করে দেখা৷ এরজন্য সংখ্যানুপাতিক ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছিল রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে৷
ওই ফর্মুলার ভিত্তিতে রাজ্যগুলির মামলাগুলি নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের বিচারপতিদের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই মত গত ১৫ অক্টোবর নির্ধারিত ছিল ত্রিপুরার সংরক্ষণ মামলার উপর শুনানি৷ কিন্তু শেষ মুহূর্তে মামলাটি কজ লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়৷ তার কারণ হিসাবে জানা গেছে, যে দুইজন বিচারপতির কোর্টে শুনানি হবার কথা তাদের বক্তব্য ছিল যে দুইজন বিচারপতি এই মামলার শুনানিতে থাকবেন তাদের মধ্যে একজন থাকতে হবে পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের মধ্যে একজন, যারা মূল মামলাটির রায় দিয়েছিলেন৷ মূলতঃ এই কারণে শেষ মূহূর্তে শুনানি থেকে বাদ পড়ে যায়৷ ফলে পুনরায় কবে নাগাদ এই মামলাটির আবার শুনানি হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা৷
যদিও ত্রিপুরা সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে মামলাটির দ্রুত শুনানি শুরু করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে৷ তাতে, কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে৷ তবে এক্ষেত্রে ত্রিপুরা সরকারের এই দাবি কতটা গুরুত্ব পাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে৷ প্রসঙ্গত, সরকারি চাকুরীতে পদোন্নতিতে সংরক্ষণ মামলাটি ঝুলে থাকার কারণে গত প্রায় চার বছর ধরে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ আর এই কারণে প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে৷ অনেককে কোনো পদোন্নতি ছাড়াই চলে যেতে হচ্ছে অবসরে৷ ফলে সাধারণ এবং সংরক্ষিত শ্রেণী উভয় অংশের কর্মী আধিকারিকদের মধ্যেই এখন হতাশা দেখা দিয়েছে৷