কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত ৫০০জন চা শ্রমিক

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ২৫ অক্টোবর ৷৷ কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত ৫০০জন চা শ্রমিক৷ অন্ধকারের পথে চা শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ৷ শ্রমিকদের দুশ্চিন্তায় চা-বাগানের ম্যানেজারের মৃত্যু, এমনটা চা-শ্রমিকদের বক্তব্য৷ ৫০০ জন চা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জীবন বাঁচানোর জন্য রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও টিআইডিসির চেয়ারম্যানের কাছে করজোড়ে অনুরোধ জানিয়েছেন শ্রমিকরা৷ উত্তর জেলার ৫৪ কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সরলা চা-বাগানে দীর্ঘদিন থেকে কাজকর্ম প্রায় বন্ধের পথে৷ আজ ছথেকে ৭-৮ মাস পূর্বে সরলা চা-বাগানের ম্যানেজারের দায়িত্বে আসেন পার্শ্ববর্তী রাজ্য অসমের শিলচরের বাসিন্দা বিকাশ দেব৷ উনি আগরতলার মেগলি চা-বাগান থেকে এসে সরলা বাগানে ম্যানেজারের দায়িত্ব হাতে নেন৷ কিন্তু তখন বাগান প্রায় বন্ধের পথে ছিল৷

উনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাগানে কর্মরত প্রায় ৫০০ জন শ্রমিকের ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে বাগান মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে বাগানের কাঁচা চা-পাতা অন্যত্র বিক্রি করে কোনমতে শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রেখেছিলেন৷ কিন্তু দুর্গাপুজার পূর্বে শ্রমিকদেরকে দুর্গোৎসবের বোনাস বাবদ ৮.৪৪ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানায় মালিক কর্তৃপক্ষ৷ তখন বাগানে কর্মরত চা শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানিয়ে বলে উনারা এত কম বোনাস নেবে না৷ বাগান মালিক কর্তৃপক্ষ থেকে খবর আসে বাগান কর্তৃপক্ষ চরম লোকসানে রয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত দুর্গাপুজার বোনাস না হওয়াতে সকল চা শ্রমিক থেকে শুরু করে বাগানের ম্যানেজার হতাশাগ্রস্ত হয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান৷ শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বরা উনাদের নিজ উদ্যোগে সকল চা-শ্রমিকদেরকে মধ্যে বস্ত্র দান করেন৷ কিন্তু তাতেও শেষ হয়নি সরলা বাগানের ম্যানেজার ও শ্রমিকদের দুশ্চিন্তা৷ সরলা চা-বাগানের মালিক বহির্রাজ্য কলকাতার অঙ্কিত কানরিয়া৷ পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামের করিমগঞ্জ জেলার হাতিখিরা চা-বাগানও অঙ্কিত কানরিয়ার৷ আর হাতিখিরা চা-বাগানটিও বন্ধ হয়ে পড়েছে৷

সুতরাং সরলা বাগানের ম্যানেজার ও শ্রমিকরা হাতিখিরা বাগানের করুণ অবস্থা দেখে হতাশাগ্রস্ত ও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান৷ অবশেষে চরম হতাশাগ্রস্ত ও দুশ্চিন্তায় পড়ে বৃহস্পতিবার সরলা চা-বাগানের ম্যানেজার বিকাশ দেব হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়৷ আর তাতে সরলা চা-বাগানের ৫০০ জন শ্রমিকদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে৷ যদিও এতদিন ম্যানেজার বিকাশ দেব মালিকপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনাক্রমে কোনভাবে শ্রমিকদের কথা ভেবে তাদেরকে কর্মস্থান দিয়ে জিইয়ে রেখেছিলেন৷ কিন্তু এখন চা শ্রমিকদের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে পরলো, আর তাতে সরলা চা-বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ সকল চা-শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের পথে৷ কর্মসংস্থান হারিয়ে পরিবার নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে সরলা বাগানের ৫০০ জন শ্রমিক৷

এই খবর চাউর হতেই সরলা বাগানে ছুটে যান বিশিষ্ট সমাজসেবী শুভাশিস সেনগুপ্ত ও কদমতলা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আব্দুল খালিক সরলা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন ও শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন যে কর্মসংস্থান হারানো সকল চা শ্রমিকরা যতদিন পর্যন্ত কর্মসংস্থান ফিরে না পাচ্ছেন ততদিন পর্যন্ত উনারা শ্রমিকদের পাশে থাকবেন৷ পাশাপাশি সরলা চা-বাগানের ৫০০ জন শ্রমিকদের বেহাল দুর্দশা ও কর্মসংস্থান ফিরিয়ে পাবার জন্য রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায় মহোদয় যেন সরলা চা-বাগানের মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে শ্রমিকদের প্রাণ বাঁচান৷ তার জন্য তারা কথা বলবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *