নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ১১ অক্টোবর ৷৷ বিয়ের ঠিক তিন বছরের মাথায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে নৃশংসভাবে খুন হল এক তরুণী গৃহবধূ৷ শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ মৃতার নাম পারমিতা ভট্টাচার্য৷ বয়স ২৩ বছর৷ পিতা সুভাষ ভট্টাচার্য৷ পিতা পেশায় পুলিশ কর্মী৷ পরিবারের কনিষ্ঠা কন্যা পারমিতা৷ বাড়ি বিশালগড় থানার অন্তর্গত জাঙ্গালিয়া এলাকায়৷

গত তিনবছর আগে বিশালগড় রঘুনাথপুর এলাকার বিনয় ভট্টাচার্যের ছেলে বিশ্বজিত ভট্টাচার্যের সঙ্গে রীতি মেনে হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে হয়েছিল পারমিতার৷ বিয়ের একবছর ভালোয় ভালোয় কেটেছিল তার দাম্পত্য জীবন৷ এরপর পারমিতার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার৷ স্বামী বিশ্বজিত ভট্টাচার্য পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী৷ সে জরিয়ে পরে পরকীয়ায়৷ বিশালগড় নিচের বাজারে একটি দোকান রয়েছে তার৷ ব্যবসার উছিলা দেখিয়ে গভীর রাতে ঘরে ফিরত বিশ্বজিত৷
পরকিয়ায় বিশ্বজিত এতই পাগল ছিল যে, পারমিতাকে দিত না স্ত্রীর মর্যাদা৷ আকণ্ঠ মদ্যপান করে রোজ রাতে তাকে বেদম প্রহারের পাশাপাশি অমানবিক নির্যাতন করত৷ বিয়ের সময় পিতা সুভাষ ভট্টাচার্য পণ পিপাসু বিশ্বজিতের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার সহ ছয় লক্ষ টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী৷ এরপরেও পণের খাই মেটেনি বিশ্বজিতের৷ সময়ে অসময়ে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য পারমিতাকে চাপ দিত বিশ্বজিত৷ কোন সময় অক্ষমতা দেখালে পারমিতার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরও তীব্র হত৷ এভাবেই চলছিল পারমিতার জীবনের শেষ দুটি বছর৷
বৃহস্পতিবার রাতটি ছিল পারমিতার জীবনের শেষ রাত৷ স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে নৃশংসভাবে খুন হল সে৷
পিতা সুভাষ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, শ্বাসরুদ্ধ করে মারার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পারমিতাকে৷ রাত সাড়ে এগারটার ঘটনা৷ খবর পেয়ে বাড়ির সকলে চলে যান হাসপাতালে৷ গিয়ে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে ট্রলিতে৷ কান্নায় ভেঙে পড়েন সবাই৷
খবর পেয়ে বিশালগড় হাসপাতালে ছুটে আসে পুলিশ৷ হাসপাতাল থেকেই স্বামী বিশ্বজিতকে আটক করে নিয়ে যায় বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ৷ শুক্রবার সকালে মৃতার বাবা সুভাষ ভট্টাচার্য, স্বামী বিশ্বজিত ভট্টাচার্য এবং শাশুড়ি সবিতা ভট্টাচার্যের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন৷ অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন পারমিতার বাপের বাড়ির লোকজন সহ জাঙ্গালিয়া এলাকাবাসী৷

