BRAKING NEWS

উদয়পুরের পর জিরানীয়ায় পনের জন্য খুন গৃহবধূ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ সেপ্ঢেম্বর ৷৷ জিরানীয়ায় বিয়ের ১০ মাসের মধ্যেই শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা করা হল এক গৃহবধূকে৷ মৃত গৃহবধূর নাম রুমা পাল৷ বাপের বাড়ি তেলিয়ামুড়ার মহারানীপুরে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে৷ এব্যাপারে মৃতার বাপের বাড়ির তরফ থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে হত্যা সংক্রান্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ রাজ্যে নারী নির্যাতন, গৃহবধূ হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা পিছু ছাড়ছে না৷ প্রায় প্রতিদিনই প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে চলেছে৷


গতকাল রাতেও জিরানীয়া থানা এলাকায় এক গৃহবধূকে হত্যা করেছে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনেরা৷ জানা যায়, মাত্র ১০ মাস আগে গত অগ্রায়ন মাসে সামাজিক প্রথায় বিয়ে হয়েছিল মহারাণীপুরের রুমা পালের সঙ্গে জিরানীয়ার শিব দেববর্মার৷ বিয়েতে পাত্রপক্ষের দাবি অনুযায়ী নগদ টাকা, সোনা গয়না, আসবাবপত্র সবকিছু মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু রুমার দাম্পত্য জীবন সুখের হয়ে উঠেনি৷ রুমার বাপের বাড়ির সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছিল না৷


বাপের বাড়ির লোকজন আসলে তাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হত৷ রুমার উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন৷ এরই শেষ পরিণতি ঘটেছে সোমবার রাতে৷ রুমাকে শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা করে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনরা৷ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে খবর দেওয়া হয় রুমার বাপের বাড়িতে৷ রাতেই রুমার মা সরস্বর্তী পাল ছুটে আসেন হাসপাতালে৷ ততক্ষণে রুমা বেঁচে নেই৷ তার নিথর দেহ হাসপাতালে পরে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন রুমার মা সরস্বর্তী পাল৷ মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে ছুটে আসেন রুমার বাবা সহ অন্যান্য আত্মীয় পরিজনরাও৷ রুমার মা, বাবা সহ আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেন পরিকল্পিতভাবে রুমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে৷ তার গলা এবং হাতে পায়ে দাগ রয়েছে৷ সে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেনি বলে দাবি জানান রুমার মা৷


পুলিশ প্রাথমিকভাবে এব্যাপারে অস্বাভাবিক মৃত্যুজনিত মামলা গ্রহণ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ মৃত দেহটি ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে৷ ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এটি আত্মহত্যা না হত্যাকাণ্ড সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ এদিকে, রুমার মা, বাবা ও আত্মীয় পরিজনরা হত্যা সংক্রান্ত অভিযোগ আনে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন৷


প্রসঙ্গত, গত দেড়বছর আগে প্রয়াত বিশ্বজিৎ দাসের মেয়ে পূজা দাসের (১৯) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল উদয়পুরের পালাটানার সুনীল দাসের ছেলে শুভঙ্কর দাসের৷
প্রথমে নিজেদের পছন্দ৷ পরবর্তী সময়ে সামাজিকভাবে বিয়ে দেয় পরিবারের লোকজন৷ বিয়ের সময় ছেলের এবং তার বাড়ির লোকজনদের যা যা দাবি ছিল সবই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বিয়ের কয়েকমাস ভালই চলছিল দাম্পত্য জীবন৷ তারপর থেকেই শুরু হয় পূজা দাসের উপর অত্যাচার৷ পুজার স্বামী পেশায় গাড়ি চালক৷ কয়েকদিন পর পর পুজার স্বামী শুভঙ্কর দাস পুজাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার চালাতো৷ গত কিছুদিন আগে পূজা গোমতী জেলা হাসপাতালে এক মৃত সন্তানের জন্ম দেয়৷ এরপর থেকেই পুজার উপর অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়৷ এরই শেষ পরিণতি ঘটে রবিবার রাতে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *