উত্তরপূর্বের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে : কাঠারিয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ সেপ্ঢেম্বর৷৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ-কথা বলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রতনলাল কাঠারিয়া৷ তাঁর দাবি, এই অঞ্চলকে দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য৷


প্রসঙ্গত, ধলাই জেলার আমবাসা টাউন হল-এ রাষ্ট্রীয় বয়োশ্রী যোজনায় সোমবার এক সামাজিক অধিকারিতা শিবির অনুষ্ঠিত হয়৷ সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ কৃত্রিম অঙ্গ উৎপাদন নিগমের উদ্যোগে এবং ধলাই জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিপিএলভুক্ত প্রবীণ নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের জীবন সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করা হয়৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি ও সামাজিক ন্যায় দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রতনলাল কাঠারিয়া৷

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ রেবতিকুমার ত্রিপুরা এবং রাজ্যের সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা৷ তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক পরিমল দেববর্মা, বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমা, বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খল, অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক গোবেকর ময়ূর রতিলাল প্রমুখ৷


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে কেন্দ্রীয় জলশক্তি ও সামাজিক ন্যায় দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রতনলাল কাঠারিয়া বলেন, গরিব মানুষদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ১৩০টি যোজনা রূপায়ণ করছে৷ এর মধ্যে এটি অন্যতম৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে৷ তাঁর কথায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গরিব প্রবীণ নাগরিকবৃন্দ বিশেষ উপকৃত হচ্ছেন৷ সে-জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান৷ তাঁর দাবি, আগামী ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর ১৫০-তম জন্মজয়ন্তীতে সারা ভারত উন্মুক্ত শৌচকর্ম-মুক্ত হয়ে যাবে৷ তিনি প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান৷ ত্রিপুরার উন্নতির জন্য যথাসাধ্য সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷


অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, সমাজে প্রবীণ ব্যক্তিরা আমাদের গর্ব৷ তাই নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁদেরকে যত্ন সহকারে দেখাশুনা করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি৷ তাঁর কথায়, প্রবীণরা সমাজ বা পরিবারের বোঝা নন৷ তাঁদের অভিজ্ঞতা আমাদের প্রয়োজন রয়েছে, দাবি করেন তিনি৷


এদিকে, সাংসদ রেবতিকুমার ত্রিপুরা বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বলেন, ভারত সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যর প্রতি বিশেষভাবে নজর দিয়েছে৷ তার জন্যই আজ এই অনুষ্ঠান৷ তাই তিনি সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন দফতরের মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান৷ তাঁর দাবি, ধলাই জেলা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর৷ প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করে কীভাবে উন্নয়ন করা যায় তার জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেন৷


অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে জেলা সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা পরিদর্শক জ্যোর্তিময় দেবনাথ বলেন, ভারতবর্ষে ৬৮টি জেলায় এই রাষ্ট্রীয় বয়োশ্রী যোজনা চালু আছে৷ ত্রিপুরায় দুটি জেলায় এই প্রকল্প চালু আছে৷ এর মধ্যে ঊনকোটি এবং ধলাই জেলা৷ তিনি বলেন, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে স্ক্রিনিং করে জেলায় মোট ১,১৫৮ জনকে এই জীবন সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে৷ অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য পেশ করেন এলিমকো সেনগুপ্ত৷ শিবিরে ধলাই জেলার আটটি ব্লক এবং কমলপুর নগর পঞ্চায়েত, আমবাসা পুর পরিষদ এলাকা থেকে ১,১৫৮ জন বিপিএলভুক্ত প্রবীণ নাগরিককে মোট ৩,০৩৮টি জীবন সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিরা প্রবীণ নাগরিকদের হাতে সামগ্রীগুলি তুলে দেন৷ শ্রবণযন্ত্র, ক্রাচ এলবো, ওয়াকিং স্টিক, হুইল চেয়ার, ট্রাইপট ইত্যাদি সহায়ক সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে৷