নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ সেপ্ঢেম্বর৷৷ জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নের বদলে পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ধারা ৩৭০ এবং ধারা ৩৫-এ সবচেয়ে বেশি দায়ী৷ তাই কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ধারা ৩৭০ এবং ৩৫-এ ধারা বিলুপ্ত করে দিয়ে অখণ্ড ভারতের সূচনা করেছে৷ কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের আলাদা অঙ্গ হিসেবে নিজেদের বিবেচনা করত৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ-কথা বলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কেন্দ্রীয় কার্যকারিণী সমিতির সদস্য ইন্দ্রেশ কুমার৷ তাঁর কথায়, আলাদা আইন, আলাদা সংবিধান এবং আলাদা পতাকার প্রচলন জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিলুপ্ত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এখন ভূস্বর্গে তরতর করে উন্নয়ন হবে৷

এদিন তিনি বলেন, ধারা ৩৭০ এবং ৩৫-এ অস্থায়ীভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরে৷ কিন্তু, রাজনৈতিক স্বার্থে স্বাধীনতার পর থেকে ওই ধারা জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিলুপ্ত করা হয়নি৷ মূলত, কট্টরপন্থী নেতাদের চাপেই ভূস্বর্গে ওই ধারাগুলি বছরের পর বছর লাগু ছিল৷ তিনি বলেন, পাকিস্তান ও চিন ভারতের প্রচুর জমি দখল করে রেখেছে৷ ধারা ৩৭০ এবং ৩৫-এ বলবতের জন্যই জম্মু ও কাশ্মীরে প্রতিনিয়ত অশান্তি বিরাজ করত৷ ফলে, উন্নয়নের বদলে ক্রমশ ধবংস হয়েছে ভূস্বর্গ৷ তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ভ্রাতৃত্ববোধের বদলে জম্মু ও কাশ্মীরে শুধু হিংসা ছড়ানো হয়েছে এতদিন৷
ইন্দ্রেশের কথায়, সময়ের সাথে জম্মু ও কাশ্মীরে ধারা ৩৭০ ও ৩৫-এ বিলোপ করে দেওয়ার কথা ছিল৷ কারণ, এক ভারত এক সংবিধান আমাদের পরিচয়৷ অথচ, জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ১৪০টি আইন প্রযোজ্য ছিল না৷ শুধু তা-ই নয়, ভারতীয় পতাকার বদলে কাশ্মীরে পৃথক পতাকা উড়ত৷ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সমগ্র ভারতবাসী নিজেদের এক ও অভিন্ন ভাবলেও কাশ্মীর সেই ভাবনার ঊধর্ে ছিল৷ তাঁরা নিজেদের আলাদা বলেই মনে করত৷ ইন্দ্রেশ কুমারের কথায়, ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হলেও দেশ দ্বিখণ্ডিত হয়ে অখণ্ডে ভারতের স্বপ্ণে আঘাত করেছে৷ পাকিস্তান কাশ্মীরের জমি অধিগ্রহণ করে রেখেছে৷ তাঁর দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরে ধারা ৩৭০ ও ৩৫-এ বিলুপ্ত করে ভারতের এখন নয়া স্লোগান পাক অধিকৃত কাশ্মীরও দখল করতে হবে৷ তবেই, সন্ত্রাসবাদের চোখ রাঙানি থেকে ভারতকে মুক্ত করা যাবে, সম্ভব হবে অনুপ্রবেশ ঠেকানো৷
এদিন তিনি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ধারা ৩৭০ এবং ৩৫-এ বিলুপ্ত করে দেওয়া এবং জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে পৃথক রাজ্য হিসেবে গঠন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কুর্নিশ জানিয়েছেন৷ এরই সাথে সবুজ ত্রিপুরা, সবুজ ভারত এবং সবুজ বিশ্ব গড়ার ডাক দিয়েছেন ইন্দ্রেশ৷ তাঁর আহ্বান, গাছ লাগান, জল বাঁচান এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখুন৷
এদিকে, ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে আইন আনুক কেন্দ্রীয় সরকার৷ এ-ভাবেই সওয়াল করেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কেন্দ্রীয় কার্যকারিণী সমিতির সদস্য ইন্দ্রেশ কুমার৷ তাঁর কথায়, বিশাল জনসংখ্যা দেশের প্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷ তাই, সচেতনতার মাধ্যমে সম্ভব না হলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের আইন আনা উচিত৷
এদিন তিনি বলেন, সারা বিশ্বের মোট জমির ৩৬ শতাংশ রয়েছে ভারতে৷ অথচ জনসংখ্যার নিরিখে সারা বিশ্বের ১৬৭ শতাংশ জনসংখ্যা এ-দেশে৷ স্বাভাবিক জনসংখ্যার তুলনায় জমি কম রয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, বলেন তিনি৷
তাঁর মতে, সারা ভারতে সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷ মানুষকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত করানো হলে, সে-বিষয়ে নিশ্চয়ই তাঁরা চিন্তাভাবনা করবেন৷ তাঁর বক্তব্য, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে পানীয় জল, অন্ন, বাসস্থান এবং অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তাও বাড়বে৷ ফলে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এখনই আটকানো সম্ভব না হলে, আগামীদিনে এ-দেশের উন্নয়নে তা বাধা হয়ে দাঁড়াবে৷ তাই আইনের সহায়তায় দেশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হবে৷

