
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ সালে ত্রিপুরায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে৷ ২০১৯ সালের এখন পর্যন্ত ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়৷ দুর্ঘটনা কমানো এবং গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবহণ ও গৃহ দফতর ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ নতুন মোটর বাইক কেনার আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক এবং পেট্রোল পাম্পে তেল নেওয়ার জন্য হেলমেট থাকা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
রবিবার থেকে এক পক্ষকালব্যাপী ‘সড়ক সুরক্ষা-জীবন রক্ষা’ শীর্ষক এক কর্মসূচির সূচনা করে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এ-কথাগুলি বলেন৷
দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, রাজ্যের রাস্তাঘাটের উন্নতি ঘটাতে হবে৷ কোনও রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হচ্ছে উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা৷ এজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাস্তা ও যোগাযোগের উন্নতিতে নজর দিয়েছেন৷ এর আগে অটলবিহারী বাজপেয়ী দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য অনেক কাজ করেছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ত্রিপুরায় ১০ হাজারের বেশি গ্রামীণ রাস্তা পাকা সড়কে উন্নীত করা হয়েছে৷ এখন দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকায় রাস্তা উন্নত হওয়ার পর দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে৷
তাই এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে৷ এর দায়িত্ব নিতে অভিভাবকদের৷ তাঁদের সন্তানসন্ততিদের সচেতন করতে হবে৷ কোথাও কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে, পুলিশ, গাড়িচালক এবং রাস্তার ওপর দোষারোপ করা হয়৷ অথচ দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী খুব খারাপভাবে গাড়ি চালানো৷ ৮০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে রাস্তার জন্য, বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
ত্রিপুরা সরকারের পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে ১৫ দিনব্যাপী সড়ক সুরক্ষা সচেতনতা অভিযান শুরু হয়েছে৷ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এ-উপলক্ষ্যে প্রথমে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ এর পর হয় এক শোভাযাত্রা৷
আজকের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান দীপক মজুমদার, আগরতলা পুরনিগমের মেয়র ড় প্রফুল্লজিৎ সিনহা-সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ এবং পরিবহণ দফতর, ত্রিপুরা পুলিশের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সুকল কলেজের ছাত্রছাত্রী৷
আলোচনা শেষে একটি সচেতনামূলক মিছিলের আয়োজন করা হয়৷ সবুজ পতাকা নেড়ে মিছিলের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ উপস্থিত অন্যান্য অতিথিরা৷ এর পর মিছিলে মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যান্য অতিথিরাও পা মেলান৷ এতে বিভিন্ন সুকল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি পুলিশ, টিএসআর ও অন্যান্য আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানরা অংশ নিয়েছিলেন৷ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সড়ক সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্ল্যা-কার্ড ছিল৷ আগামী ১৫ সেপ্ঢেম্বর পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি৷ এর অঙ্গ হিসেবে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক সচেতনতা সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে৷ মূলত সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে এবং যান দুর্ঘটনা কমাতে সরকারের এই উদ্যোগ৷

