‘মন কি বাত’-এ প্লাস্টিক মুক্ত ভারত গড়ার ডাক থেকে শুরু করে শ্রীকৃষ্ণ ও সুধামা বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ উল্লেখ করলেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

নয়াদিল্লি, ২৫ আগস্ট (হি.স.) : প্লাস্টিক মুক্ত ভারত গড়তে গণ আন্দোলনের ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার মন কি বাতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ তম জন্মজয়ন্তী যখন আমরা পালন করব তখন প্লাস্টিক মুক্ত ভারত গড়ার অঙ্গীকারবদ্ধ হব। মা ভারতীকে প্লাস্টিক মুক্ত করে এই বছর গান্ধী জয়ন্তী পালন করার আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার প্লাস্টিক মুক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য। এবারের ১৫ আগস্ট আমি বলেছিলাম ১২৫ কোটি দেশবাসী খোলা জায়গায় শৌচকর্ম থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য নিরলস ভাবে প্রচার করতে পারে। তবে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালাতে হবে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের গুরুত্ব ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাড়ির ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা, রাস্তা, নর্দমা, স্কুল, কলেজ পরিষ্কার রাখার জন্য বড় রকমের প্রচার চালাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধীকে প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হলে গোষ্ঠী পরিষেবার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, সত্যের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক ছিল মহাত্মা গান্ধীর। সেবার প্রতি এক আধ্যাত্মিক যোগ অনুভব করতেন মহাত্মা গান্ধী। যারই প্রয়োজন পড়ত গান্ধীজি তাঁকে সেবা করত। সেবা করে এক ঐশ্বরিক শান্তি অনুভব করতেন জাতির জনক। সেবা পরম ধর্ম যে জাতির জনকের আদর্শ ছিল তা মনে করিয়ে দেন তিনি।

বই পড়ার উপর বিশেষ জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বই সংগ্রহ করে তা গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে জ্ঞানের আলো ছড়ানো প্রয়োজন। ১৩০ কোটি ভারতীয় ১৩০ কোটি ভাবনাকে জাগ্রত করে উদ্যোগী হয়েছে। মহাত্মা গান্ধী গরিব, প্রান্তিক, দুর্বল, অভুক্তদের সেবা করতেন। কুষ্ঠো রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।

দেশে অপুষ্টি রোধ করার বিষয়টি এনডিএ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার যে গুরুত্ব দিচ্ছে, তা এদিন মন কি বাত অনুষ্ঠানে বুঝিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসচেতনতার কারণে গরিব এবং বিত্তশালী পরিবারগুলি অপুষ্টিতে ভুগছে। সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে গোটা দেশে পোষণ অভিযান চালানো হবে। এই অভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক উপায়ে কি ভাবে অপুষ্টির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করা যায় তা প্রচার করা হবে। বিষয়টিকে গণআন্দোলনে নিয়ে যাওয়া হবে।

মুঠিভর দানা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, নাসিকে মুঠিভর দানা বড় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ফলনের সময় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা কৃষকদের থেকে এক মুঠো দানা সংগ্রহ করে পরে তা রান্না করে শিশু এবং মহিলাদের খাওয়াত।

এদিন তিনি রেডিওতে সম্প্রচারিত ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা এবং জীবন থেকেই বর্তমান সময়ে সকল সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব। শ্রীকৃষ্ণের জীবন থেকে সকলেই বর্তমান সময়ের যে কোনও সমস্যার সমাধান পেতে পারে। বহুযুগ আগের এই মহাত্মার আজও সমান ভাবে সকলকে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে। জন্মাষ্টমীর উৎসবের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যে কত মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারি ছিলেন কয়েক হাজার বছর পরে আজও তা অনুভব করা যায়। প্রতিবার নতুন ভাবে এই উৎসব আমাদের উদ্বেলিত করে থাকে। এক নতুন উদ্যম ও অনুপ্রেরণা নিয়ে আসে এই উৎসব।

শ্রীকৃষ্ণ ও সুধামা বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে যে মূল্যবোধ ছিল তা শিক্ষণীয়। এক মহান যোদ্ধা হওয়া সত্বেও সারথী হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।

বেয়ার গ্রিলস কীভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হিন্দি বুঝলেন! এদিনের  ‘মন কি বাত’-এ এবার সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর এপিসোডে একটি কর্ডলেস ডিভাইসের সাহায্যে তাঁর সঙ্গে কথোপকথন করেছেন বিখ্যাত অ্যাডভেঞ্চারার, এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

রবিবার তাঁর ‘মন কি বাত’-এ এই গোপন কথা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বললেন, জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে দু’জনের কথোপকথন চালাতে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। তিনি আরও জানান, “যখনই আমি বলছিলাম, সঙ্গে সঙ্গে তা ইংরেজিতে অনুমাদ হয়ে যাচ্ছিল। বেয়ার গ্রিলসের কানে ছোট একটি কর্ডলেস যন্ত্র লাগানো ছিল। তার দ্বারা আমি যা হিন্দিতে বলছিলাম, তিনি তা শুনছিলেন ইংরেজিতে। এইভাবে কথোপকথন খুব সহজ হয়ে যায়। এটা একটা দারুণ প্রযুক্তি।” তাঁর কথায়, “এপিসোডটা কি পরে এডিট করা হয়েছিল? এই এপিসোডের জন্য কতবার শ্যুটিং করতে হয়? কীভাবে হয় শ্যুটিং? অনেকেই কৌতূহলের সঙ্গে এ সব প্রশ্ন করেছেন। এতে কোনও সিক্রেট নেই। অনেকের মনেই এই প্রশ্ন ছিল। সে জন্যই এই গোপন কথাটা জানালাম। কোনও সিক্রেট নয়, এটা একেবারেই প্রযুক্তি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *